বিশেষ প্রতিবেদন: মোসাদ! ইসরাইলের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থা। ক্ষমতা, শক্তি আর প্রযুক্তিতে এই গোয়েন্দা সংস্থা বিশ্বের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে একটি। মোসাদের বার্ষিক বাজেট ৩ বিলিয়ন ডলার। রয়েছে প্রায় ৭ হাজারেরও বেশি কর্মী। একমাত্র আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ রয়েছে মোসাদের ওপর। শুধু ইসরাইল নয়, ইহুদিদের স্বার্থ রক্ষায় দেশে দেশে রয়েছে মোসাদের শাখা অফিস কিংবা এজেন্ট। নানা দেশের নাগরিকরাও এই গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করেন। গোয়েন্দা প্রযুক্তিতেও মোসাদ বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠান। গোয়েন্দা নজরদারির দারুণ সব প্রযুক্তি বিশ্বের কাছে বিক্রি করে মোসাদ। সেই মোসাদই হামাসের আকস্মিক হামলা রুখতে ব্যর্থ। আর এনিয়ে এখন সরগরম ইসারাইল। সরকারের শীর্ষ নেতারা মোসাদের কার্যক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। জানতে চাইছেন এত বড় হামলার পরিকল্পনা হামাস অনেক দিন ধরেই করছিল, তারপরও মোসাদ সেটি কেন জানতে পারেনি?
৬ অক্টোবর, হাজার হাজার ইসরাইলি নাগরিকের ঘুম ভাঙে সাইরেনের শধে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিভিন্ন শহরে আছড়ে পরে হাজার হাজার রকেট। গাজা থেকে ইসরাইলের মাটিতে স্থল হামলার পাশাপাশি প্রায় পাঁচ হাজার রকেট নিক্ষেপ করেছিল হামাস। হামাস যোদ্ধারা ইসরাইলের ভেতরে ২২টি স্থানে স্থানে ঢুকে পড়ে ও শতাধিক ইসরাইলি সেনাকে বন্দি বানায়। কিন্তু শিন বেট ও মোসাদের মতো শক্তিশালী নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা থাকার পরও কি করে হামাসের যোদ্ধারা এমন কান্ড ঘটাল, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত ইসরাইলি নেতারা। ফলে প্রশ্নের মুখে রয়েছে মোসাদের বিশ্বাসযোগ্যতা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আকাশ ইসরাইলি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আয়রন ডোম হামাসের রকেটগুলোতে আটকাতে পারেনি। হাজারো ক্যামেরা, গ্রাউন্ড-মোশন সেন্সর এবং নিয়মিত সেনা টহলসহ গাজা-ইসরাইল সীমান্তে উচ্চক্ষমতার প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার পরেও হামাসের যোদ্ধারা অনুপ্রবেশে সফল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়োগুলোতে দেখা যাচ্ছে, একটি বুলডোজার দিয়েই আপাত দুর্ভেদ্য ‘লোহার প্রাচীর’ ভেঙে ফেলছে প্রতিরোধ আন্দোলনের যোদ্ধারা। হামাসের হামলার জটিল কৌশল বাস্তবায়নের জন্য কয়েক মাসের পরিকল্পনা ও অনুশীলন দরকার, সে বিষয়ে নিশ্চিত ইসরাইলি কর্তারা। আর এ কারণেই তারা মোসাদের ওপর চটেছেন। এত সময় ধরে হামলার পরিকল্পনা হল, আর মোসাদ কিছুই জানতে পারল না।