পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ইউরোপজুড়ে ব্যাপক হারে ইসলামোফোবিয়া ছড়িয়ে পড়ার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করেছে মুসলিম নাগরিক অধিকার গ্রুপগুলো। পোল্যান্ডে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ও মানবাধিকার সম্মেলনে ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তাঁরা। অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, সুইডেন, স্পেন ও নেদারল্যান্ডসের সাতটি মুসলিম গ্রুপ এসব দেশে ‘রাষ্ট্রীয় মদতে’ ইসলামোফোবিক পরিবেশ সৃষ্টির অভিযোগ তোলেন। ওয়ারশ্যতে অনুষ্ঠিত সিকিউরিটি অ্যান্ড কোঅপারেশন ইন ইউরোপস (ওএসসিই) হিউম্যান ডাইমেনশন কনফারেন্সে প্রতিটি সংগঠন ৩ মিনিট করে বক্তব্য রাখে।এবারের সম্মেলনে পলিশ কর্তৃপক্ষ কেজের (লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন) আন্তর্জাতিক পরিচালক মুহম্মদ রাব্বানিকে এই সম্মেলনে অংশ নিতে পোল্যান্ডে প্রবেশ করতে দেয়নি। তার নাম শেনজেন ইনফরমেশন সিস্টেমে থাকায় তারা এই সিদ্ধান্ত নেয়। উল্লেখ্য, শেনজেনভুক্ত কোনও দেশ কারও নাম তালিকাভুক্ত করলে তার পক্ষে শেনজেন জোনের কোনও দেশে প্রবেশ করা সম্ভব হয় না। চলতি বছর ওএসসিই-তে সভাপতিত্ব করেন নর্থ ম্যাসিডোনিয়ার বিদেশমন্ত্রী বুজার ওসমানি। সম্মেলনে নেদারল্যান্ডসের মুসলিম রাইটস ওয়াচের মুখপাত্র আদানি আল-কানফুদি বলেন, ‘অন্যান্য মুসলিম নাগরিক সংস্থার পাশাপাশি রাব্বানির সঙ্গেও তার সাক্ষাত করার কথা ছিল।’ তিনি বলেন, তাকে পোল্যান্ডে প্রবেশ করতে না দেওয়ার ঘটনাটি হল ‘বৃহত্তর চিত্রের উদাহরণ, এখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অন্যায়ভাবে কালো তালিকায় রাখা হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ভয়াবহ বাস্তবতার মধ্যে আছি। এখানে মুসলিমদের পরিকল্পিতভাবে টার্গেট করা হয়, তাদের সাংবিধানিক অধিকার নির্লজ্জভাবে লঙ্ঘন করা হয়। এই বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা কেবল ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপরই প্রয়োগ করা হয় না, বরং আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যেও ভীতি ও বিভাজন সৃষ্টি করা হয়।’ নিজের দেশের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘শত শত মুসলিমকে ভ্রান্তভাবে সন্ত্রাসী তালিকায় রেখেছে ডাচ কর্তৃপক্ষ। এর ফলে অনেকে জীবিকা হারিয়েছে, অনেকে আর্থিক ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছে, অনেকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের মতো থাকছে।’ সুইডেনের আরমান জেজিজ বলেন, তিনি যখন তাঁর ভাষণটি লিখছিলেন, তখন সুইডেনে একটি মসজিদ পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘যদি বইপুস্তক পুড়িয়ে দেওয়া হয়, মুসলিমদের তাদের পোশাক পরতে না দেওয়া হয়, তাদের ওপর সবসময় নজরদারি চালানো হয়, তাদেরকে যদি সমস্যা হিসেবে দেখা হয়, তবে তারা কী করবে?’