পারিজাত মোল্লা: বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে চলে ইডি বনাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর মামলার শুনানি। এদিন ডিভিশন বেঞ্চ কোন নির্দেশিকা জারি করেনি,তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি কে আদালত প্রস্তাব রেখেছে যে, – ‘ যে নথি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর কাছে চেয়েছেন, তা আপনারা দেখুন।তারপর নথিতে সন্তুষ্ট না হলে তারপর তলব করুন ‘।
যদিও ইডি এদিন হাইকোর্টে কোন পাকা কথা দেয়নি। এরেই মধ্যে আগামী ৯ অক্টোবর তলব করা হয়েছে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে। এর পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় কেও তলব করেছে ইডি।
বুধবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে প্রশ্নের মুখে পড়েন অভিষেকের আইনজীবী।
বিচারপতি জানতে চান, -‘ সম্পত্তির হিসাব দিতে আপত্তি কোথায়?’ অন্যদিকে তদন্তের অবস্থান এবং গতি দেখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রতিও বিচারপতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গিয়েছে।এদিন ডিভিশন বেঞ্চ প্রস্তাব দেয় ইডি কে -‘ নথির তথ্যে সন্তুষ্ট না হলে তবেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডাকা হোক’ । তবে একই সঙ্গে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশের উপরে কোনও স্থগিতাদেশও দেয়নি। বিচারপতি সিনহার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক।এদিন প্রথমার্ধে অভিষেকের মামলার শুনানি হয়নি কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে।
বিচারপতি অমৃতা সিনহার সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালে়ঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টায় সেই শুনানি হওয়ার কথা ছিল।কিন্তু শুরুতেই এদিন ত্রুটি খুঁজে পায় আদালত। দেখা যায় আবেদনকারী হিসেবে অভিষেকের বদলে স্বাক্ষর রয়েছে তাঁর বাবা অমিত বন্দ্যোপাধ্য়ায়। নেই কোনও অথরাইজেশন লেটার বা সম্মতিমূলক চিঠিও।নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গত মঙ্গলবারই মামলা করেছেন অভিষেক।
এদিন মামলা ওঠার পর দেখা যায় আবেদনে রয়েছে অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সই। নিয়ম হল, এ ক্ষেত্রে মামলাকারী সই না করতে পারলে তাঁর বাবা বা মা সই করতেই পারেন, তবে, মামলাকারীকে সম্মতিসূচক চিঠি দিয়ে হয়। এই মামলার ক্ষেত্রে সেটা নেই। মামলার ত্রুটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার বেলা দুটোয় ফের শুনানি চলে।গত মঙ্গলবারই বেলা ১২ টায় ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, মামলা কাগজপত্র আদালতে না পৌঁছনোয় শুনানি পিছিয়ে যায়। তাই বুধবার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। এদিকে, বুধবার ইডি দফতরে অভিষেকের হাজিরা দেওয়ার কথা থাকলেও তা এড়িয়ে যান সাংসদ।
ফের আগামী ৯ অক্টোবর তাঁকে তলব করা হয়েছে। বুধবার সেই নোটিসের কথাও আদালতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। অপরদিকে এদিন এক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে -‘ সমনে সাড়া না দেওয়ার জন্য এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট কাউকে গ্রেফতার করতে পারে না’।
রিয়েল এস্টেট সংক্রান্ত একটি মামলায় বুধবার এমনই জানাল সুপ্রিম কোর্ট । তৃণমূল সাংসদ অভিষেক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের এদিনের অভিমত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে আইনজীবী মহল।এদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এএস বোপান্না এবং সঞ্জয় কুমার জানিয়েছেন, -‘ সমন প্রাপক তদন্তে সহযোগিতা করছে না বলেই পিএমএলএ আইন অনুযায়ী কাউকে গ্রেফতার করা যায় না’। এক রিয়েল এস্টেট সংস্থার দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ইডি।
পঙ্কজ ও বসন্ত বনসল নামের ওই দুই ব্যক্তি ইডি’র প্রশ্নে সদুত্তর দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ। এই কারণে পিএমএলএ আইনের ১৯ ধারা মতে তাদের গ্রেফতার সঠিক নয় বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।দেশের শীর্ষ আদালত আরও বলেছে, -‘ ওই ১৯ ধারা অনুযায়ী তদন্তকারীকে নিশ্চিত হতে হবে যে, সমনপ্রাপক সত্যিই অপরাধ করেছেন’।