বিশেষ প্রতিবেদন: বরফের ভেতর দিয়ে উঁকি দিচ্ছে কচি পাতা, ফুল। শুষ্ক শীতের পর এমন দৃশ্য বসন্তের আগমন মনে করিয়ে দেয়। কিন্তু বিজ্ঞানীরা পড়েছেন শঙ্কায়। কারণ, যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে সেখানে তা কখনই ঘটার কথা নয়। এর আগে তীব্র শীতল এই অঞ্চলে এত দ্রুত কখনও কোনও উদ্ভিদের বৃদ্ধি হয়নি। কিন্তু শুধু বৃদ্ধি নয়, চরম শীতল আবহাওয়ায় ফুলও ফুটতে শুরু করেছে। আর এতেই বুক কাঁপছে পরিবেশবিদদের। এই ফুল ফোটা কি তবে আন্টার্কটিকার বাস্তুতন্ত্র বদলে যাওয়ার ইঙ্গিত? বরফে ঢাকা এই মহাদেশে ফুল ফোটা এক প্রকার অসম্ভব। আর সে কারণেই ভ্রু কুঁচকে রয়েছেন বিজ্ঞানী থেকে পরিবেশবিদরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সিগনি দ্বীপে মূলত দুই ধরনের উদ্ভিদ জন্মাতে দেখা গিয়েছে। তাতে ফুল ফুটেছে। ১৯৬০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চলে যে হারে এই উদ্ভিদের জন্ম হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তার ১০ গুণ উদ্ভিদ জন্মেছে। আন্টার্কটিকায় অন্য ধরনের উদ্ভিদের জন্মের হারও বেড়েছে। আগের তুলনায় এখন ওই অঞ্চলে বিভিন্ন উদ্ভিদের বৃদ্ধি বেড়েছে পাঁচ গুণ। স্কটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর মেরিন সায়েন্সের বিজ্ঞানী ম্যাথিউ ডেবি বলেন, ‘পরিবর্তন যে হচ্ছে, এবং সেটা কত দ্রুত হচ্ছে সেটা আমরা এখন বুঝতে পারছি।’ সারা বছর হিমাঙ্কের অনেক নিচে তাপমাত্রা থাকে আন্টার্কটিকায়। সে কারণে মস, লিচেন জাতীয় শৈবালেরই জন্ম হয়। তারাই ওই অঞ্চলের পুরনো বাসিন্দা। কিন্তু এবার অ্যান্টার্কটিকায় নতুন ধরনের উদ্ভিদের দেখা মিলছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে সেখানে নতুন ধরনের উদ্ভিদের জন্ম হচ্ছে। এর ফলে কোপ পড়তে পারে সেখানকার মস, লিচেনের বৃদ্ধিতে। ফলে আন্টার্কটিকার বাস্তুতন্ত্র ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। মাটির চরিত্র বদলে যেতে পারে এমনও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতালির ইনসাবরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছেন। ওই দলেরই নিকোলেত্তা ক্যানোনি বলেন, ‘আন্টার্কটিকার জীববৈচিত্র্য এবং দৃশ্যপট দ্রুত বদলে যেতে পারে।’