পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: কানাডার নাগরিক ও সেখানে বসবাসরত শিখ ধর্মাবলম্বীদের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যা বিষয়ক গোয়েন্দা তথ্য ভারতকে বেশ কয়েক সপ্তাহ আগেই দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ভারতের সহযোগিতা চায় তার দেশ। রাজধানী অটোয়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেন, ‘গত সোমবার আমি যা বলেছি, সে বিষয়ক গোয়েন্দা তথ্য আমরা অনেক আগেই ভারতকে দিয়েছিলাম, বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে। এই ব্যাপারটি খুবই গুরুতর এবং আমরা এই ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করতে ইচ্ছুক। আমরা আশা করছি, ভারত এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে আমাদের সহযোগিতা করবে।’ নিজ্জরের হত্যার জন্য ভারতকে সরাসরি দায়ী করে গত ১৮ সেপ্টেম্বর কানাডার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ভাষণে তিনি বলেন, এই অভিযোগের পক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ তার কাছে রয়েছে। তার এই বক্তব্যের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে শুরু হয় টানাপোড়েন। গত কয়েক দিনে তলানিতে ঠেকে উভয় দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক। ভারতের অভিযোগ, কানাডা সুনির্দিষ্টভাবে এ সম্পর্কিত কোনও তথ্য প্রদান করেনি। জাস্টিন ট্রুডোর অভিযোগকে‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত’বলেও উল্লেখ করেছে ভারত। এদিকে, শুক্রবার ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, তার দেশের সরকার এই হত্যাকান্ডের ‘জবাবদিহিতা’ চায়। ‘প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো যে অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’, সংবাদ সম্মেলনে বলেন ব্লিঙ্কেন। নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে কানাডার তদন্তে সহায়তা করতে ভারতের প্রতি প্রকাশ্যে আহ্বান জানিয়েছে আমেরিকা। উল্লেখ্য, ভারত থেকে কানাডায় গিয়ে সেখানকার নাগরিকত্ব অর্জনকারী হরদীপ সিং নিজ্জর ভারতের খালিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী খালিস্তান টাইগার ফোর্স এবং শিখস ফর জাস্টিস কানাডা শাখার শীর্ষ নেতা ছিলেন। গত ১৮ জুন দেশটির ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের রাজধানী ভ্যানকুভারের একটি গুরুদুয়ারার সামনে নিহত হন তিনি। এই ঘটনায় ভারত-কানাডার সম্পর্কে প্রভাব পড়েছে। এরই মধ্যে উভয় দেশ পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থা হিসেবে কূটনীতিক বহিষ্কার করেছে। স্থগিত হয়েছে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা। ভ্রমণ সতর্কতাও জারি করেছে দেশ দুটি। সেই সঙ্গে ভারত কানাডার নাগরিকদের ভিসা প্রদান স্থগিত ঘোষণা করেছে।