পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সনাতন ধর্ম নিয়ে বিতর্কের মাঝেই চেন্নাই হাইকোর্টের গুরুত্বপূর্ণ বয়ান প্রকাশ্যে এল। বাক স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার হলেও মানুষের বিশ্বাসে আঘাত করে এমন ভাষণ কখনই সমর্থনযোগ্য নয়।
আদালত জানায়, সনাতন ধর্ম কিছু পবিত্র কর্তব্যের সমষ্টি, যেখানে দেশ, রাজা নিজের মাতা-পিতা এবং গুরুজনদের প্রতি কর্তব্য এবং দুঃস্থদের প্রতি সহানুভূতি শামিল রয়েছে। বিচারপতি শেষশায়ী বলেন, ‘নাগরিক সমানাধিকার যে দেশে রয়েছে সেখানে ছুৎ-অচ্ছুৎ সহ্য করা যায় না। তা সত্ত্বেও ‘সনাতন ধর্ম’ যদি কোনও জায়গায় এই রীতিকে কোথাও অনুমতি দেয়, তবুও এই কু-সংস্কার মেনে নেওয়া যায় না। সংবিধানের ১৭ অনুচ্ছেদে ঘোষণাই করা হয়েছে অস্পৃশ্যতাকে শেষ করে দেওয়া হল।
বিচারপতি শেষশায়ী সনাতন ধর্ম নিয়ে দেশব্যাপী তর্ক-বিতর্ক, বিক্ষোভ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মনে হচ্ছে সনাতন ধর্ম শুধু জাতিভেদ, অস্পৃশ্যতা এবং অন্ধবিশ্বাসকে উৎসাহ দিতেই সৃষ্টি।
বিচারপতি বলেন, বাক স্বাধীনতা একটি মৌলিক অধিকার। কিন্তু এই অধিকারকে বিদ্বেষ ছড়াতে ব্যবহার করা যায় না, বিশেষ করে বিষয়টা যখন ধর্মের এবং মানুষের বিশ্বাসের সঙ্গে জড়িত। প্রত্যেকেরই উচিত কিছু বলার আগে সুনিশ্চিত করা কেউ যেন আঘাত না পায়।
বিচারপতি বলেন, প্রতিটি ধর্মই বিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে। তাই ধর্ম সম্পর্কে যে কোনও বয়ান দেওয়ার আগে অন্যের বিশ্বাসের কথাও চিন্তা করা জরুরি। এককথায় বলতে গেলে ব্যক্তিগত বয়ান কখনও হেটস্পিচ হতে পারে না।
উল্লেখ্য, তামিলনাড়ুর মন্ত্রী তথা এমকে স্তালিন পুত্র উদয়নিধির সনাতন ধর্ম নিয়ে বিতর্কিত বয়ান প্রসঙ্গেই আদালতের এই বক্তব্য প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি ডেঙ্গু ম্যালেরিয়ার সঙ্গে সনাতন ধর্মের তুলনা করলে চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে ময়দানে নামে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও তাঁর জনসভায় এই বক্তব্যকেই ইস্যু করেছেন।