পুবের কলম প্রতিবেদকঃ সারা দিনে বার বার হাত-মুখ ধোয়া কিংবা নিজেকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বাতিকের ফলে প্রতিদিন শহরে অপচয় হচ্ছে বিপুল পরিমান পরিশোধিত জল।বিশেষ করে করোনাকালীণ সময় থেকেই ঘন ঘন হাত-মুখ ধোয়া কিংবা সারাদিনে একাধিকবার বাড়ি আর শৌচালয়ে জল ঢালা রীতিমত কিছু মানুষের নিত্য অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। আবার কেউ কেউ অতিরিক্ত সূচিবায়ুগ্রস্থ হওয়ার জন্যই অকারণ জল অপচয় হচ্ছে শহরে। সূচিবায়ুগ্রস্থ বাসিন্দার জল অপচয়ের ঠেলায় মাথায় হাত পড়েছে খোদ কলকাতা শহরের বিভিন্ন আবাসনের বাসিন্দাদের।কেউ কেউ অকারণে এত বেশি পরিমান জল অপচয় করছেন যে কোথাও নিমেশেই খালি হয়ে যাচ্ছে আবাসনের জলের ট্যাঙ্ক, আবার কোনো আবাসনে অতিরিক্ত জল অপচয়ের জেরে উপচে পড়ছে আবাসনের নর্দমাগুলি। জল অপচয় ঠেকানোর জন্য এক ব্যক্তি অভিযোগ জানিয়েছেন খোদ কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, সূচিবায়ুগ্রস্থতার জন্যই কলকাতা শহরে নষ্ট হচ্ছে প্রায় ১ কোটি লিটার জল। এর ফলে কলকাতা পুরসভা এলাকায় প্রতিদিন দেড়শো কোটি লিটারেরও বেশি জল শোধন করে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে জলের ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। শুচিবায়ুগ্রস্থ বাসিন্দাদের এমন মনোভাব ঠেকাতে জলের কর বসানোর দাবি তুলছেন শহরের বাসিন্দাদের একাংশ।
এ ব্যাপারে চিকিৎসকরা বলছেন, অতিরিক্ত জল ঘাঁটাঘাঁটি আদতে এক মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ।কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার সৃজিত ঘোষ বলেন, চিকিৎসাশাস্ত্রের পরিভাষায় এ অসুখের নাম ‘অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার। যেসব ব্যক্তি এই রোগের শিকার, তাঁরা একই কাজ বারে-বারে করেন। কেউ দরজা বন্ধ করার পরেও বারবার দেখতে থাকেন, দরজাটা ঠিকঠাক বন্ধ হয়েছে কিনা। আবার অনেকেই আছেন, যারা ঘনঘন হাত-পা ধুতে থাকেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণমল্লিক রোড থেকে এমনই দাবি আসে মেয়রের কাছে। মেয়রের কাছে অভিযোগকারীর বক্তব্য, গলিতে জল জমে রয়েছে। বরো ১- এর নিকাশি বিভাগের কাউকে দ্রুত পাঠান। কিন্তু জল জমে থাকার কারণ শুনে রীতিমত চোখ কপালে উঠে যায় মেয়রের। অভিযোগকারী জানিয়েছেন, ‘ শ্বেতা সেন নামে এক মহিলা থাকেন তাঁর ওপরের ফ্ল্যাটে। অকারণে বাথরুমে বালতি বালতি জল ঢেলেই চলেছেন। যার প্রভাব পড়েছে ফ্ল্যাটের নিকাশি নালায়’। এ ব্যাপারে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, “কিছু মানুষের অভ্যেস জল জমিয়ে রাখা। ঘনঘন জল ফেলা। এটা একটা অসুখ। জল শোধন করতে পুরসভার খরচ হয়। এরা পুরসভার টাকা নষ্ট করছেন।”