পুবের কলম,ওয়েবডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সব শিবিরেই। তার মাঝেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ এর পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটতে শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্র। এক দেশ এক ভোট কার্যকরী করতে ইতিমধ্যেই কমিটি গড়েছে কেন্দ্র। যার মাথায় বসানো হয়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের শক্তি সঞ্চয় করতে নেমে পড়েছে বিজেপি। পাল্টা একজোটে বিরোধিতা করতে নেমে পড়েছে বিরোধীরাও। ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নীতি সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিপন্থী এবং সংবিধানের পরিপন্থী বলে অভিযোগ করছেন তাঁরা। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, এনসিপি, সিপিআই এবং মিম এই এক দেশ এক ভোট ধারণার বিরোধিতা করছে।
‘এক দেশ এক ভোট’ নীতির কার্যকর করার ক্ষেত্রে মোদি সরকারের যুক্তি হল, এতে নির্বাচনের খরচ কমবে। একটি ভোটার তালিকাতেই দু’টি নির্বাচন হওয়ায় সরকারি কর্মীদের তালিকা তৈরির কাজের চাপ কমবে। ভোটের আদর্শ আচরণ বিধির জন্য বার বার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে থাকবে না। নীতি আয়োগ, আইন কমিশন, নির্বাচন কমিশনও এই ভাবনাকে নীতিগত সমর্থন জানিয়েছে বলে কেন্দ্রের দাবি। তবে বিরোধী দলগুলি প্রথম থেকেই এই নীতির সমালোচনা করছে। তাদের মতে, এই নীতি নিয়ে মোদি সরকার ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে।’
২০১৯-এর লোকসভা ভোটে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলির মোট খরচের পরিমাণ ছিল ৬০ হাজার কোটি টাকা। সেন্টার ফর মিডিয়া স্টাডিজের রিপোর্ট অনুযায়ী এর ৪৫ শতাংশই খরচ করেছে বিজেপি ও তাদের প্রার্থীরা। নরেন্দ্র মোদি কি তাঁর দলের নির্বাচনী খরচে রাশ টানতে পারবেন? প্রধানমন্ত্রী সত্যিই নির্বাচনী সংস্কার চাইলে তাঁরই চালু করা অস্বচ্ছ ‘ইলেকটোরাল বন্ড’ সবচেয়ে আগে বাতিল করা দরকার। দরকার ভোটে প্রার্থীর পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলিরও খরচের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া। আসলে বিজেপির লক্ষ্য শুধু ‘এক দেশ-এক নির্বাচন’ নয়। তাদের স্বপ্ন, ‘এক দেশ-এক নির্বাচন-এক দল।’ নির্বাচনের মাধ্যমেই ভারতে একদলীয় ব্যবস্থা কায়েম। এমনই অভিযোগ বিরোধীদের।
অনেকের অভিযোগ, অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ, কাশ্মীরের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ, তিন তালাক নিষিদ্ধ করে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির আংশিক প্রয়োগ করে বিজেপির তিন মৌলিক ঘোষণা মোদি কার্যকর করে ফেলেছেন। তাঁর বাকি কাজ হল ২০২৫-এ রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ শতবর্ষে পা দেওয়ার আগে ভারতের সংবিধান বদলে হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণার জন্য দেশের শাসন কাঠামো পরিবর্তনের কাজটি সেরে ফেলা। ‘এক দেশ-এক ভোট’ ব্যবস্থা প্রণয়ন সেই লক্ষ্যেই অগ্রসর হওয়া। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপির লক্ষ্য শুধু ‘এক দেশ-এক নির্বাচন’ নয়। তাদের স্বপ্ন, ‘এক দেশ-এক নির্বাচন-এক দল।’ নির্বাচনের মাধ্যমেই ভারতে একদলীয় ব্যবস্থা কায়েম।