পুবের কলম প্রতিবেদক, বসিরহাট: টাকি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ইস্তফার হুমকি দিলেন টাকি পুরসভার পাঁচ তৃণমূল কাউন্সিলর। পদত্যাগী কাউন্সিলররা ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক গাজীর বিরুদ্ধে তোলাবাজি, তছরূপ, গুন্ডামি সহ একগুচ্ছ অভিযোগ এনেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ভাইস চেয়ারম্যানের জন্য দলীয় কাউন্সিলররা পুর পরিষেবা দিতে পারছেন না।
মঙ্গলবার ওই পাঁচ কাউন্সিলর বিধানসভা ভবনে গিয়ে তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতাদের কাছে পদত্যাগপত্রের অনুলিপি নিয়ে দেখা করেন। তাঁরা জানান, ফিরে গিয়েই মহুকুমা শাসকের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেবেন।কাউন্সিলররা সেচমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনার ভারপ্রাপ্ত নেতা পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন। তাঁর কাছে ওই বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলররা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন।
এদিকে টাকি টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রদ্যুৎ দাস, সহ টাকি পৌরসভার পাঁচ জন কাউন্সিলর মঙ্গলবার বিধানসভায় গিয়ে ইস্তফা দেওয়ার হুমকি দেওয়ায় টাকি পৌরসভায় গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তাদের দাবি ভাইস চেয়ারম্যান তিনি একাই সবকিছু করেন। কাউন্সিলরদের কোন মতামত নেন না এবং প্রতিবাদ করতে গেলে মারধর ও ভয় দেখানো হয়।যদিও এ নিয়ে এদিন কোন মীমাংসা হয়নি।
এদিন বিধানসভার লবিতে দাঁড়িয়ে পাঁচ কাউন্সিলরের তরফে প্রদ্যুৎ দাস বলেন, ওই ভাইস চেয়ারম্যানের জন্য আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা পুর নাগরিকদের কাছে পৌঁছে দিতে পারছি না। তাঁর অভিযোগ, ফারুক গাজি আপাদমস্তক দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। প্রদ্যুৎ বলেন, এর আগে আমরা জেলা নেতৃত্বের কাজে বারবার অভিযোগ জানিয়েছি কিন্তু কারও কাছ থেকে সুরাহা পাইনি।এমনকী তিনি মহিলা কাউন্সিলরদের গায়েও হাত তোলেন। সে ব্যাপারেও জেলার নেতাদের জানানো হয়েছে। দেওয়ালে পিঠ থেকে গিয়েছে বলে আমরা এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলাম।আমরা এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।
তবে এ ব্যাপারে উপ পৌর প্রধান ফারুক গাজী বলেন, যারা দুর্নীতির কথা বলছেন তাদের স্বার্থে ঘা লেগেছে।, তারা চাইছেন টাকি পৌরসভার উন্নয়নের টাকা তাদের একাউন্টে দিতে হবে। এটা নিয়ম বহির্ভূত কাজ। এইগুলোর জন্য টাকি পৌরসভায় সরকারি আধিকারিকরা আছেন।তারাই বিষয়গুলো দেখেন। এর অথরিটি আমি নই। চেয়ারম্যান এবং সরকারি আধিকারিকরাই সই করেন কাগজপত্রে। এগুলো আমি করতে পারি না। পাশাপাশি টাকি পৌরসভা এলাকায় অনলাইন লোটো বন্ধ করে দিয়েছি বলে অনেকের স্বার্থে ঘা পড়েছে। এছাড়া আমাকে দিয়ে বেআইনি কাজ করার চেষ্টা করছিল ওই কাউন্সিলররা।
হাসনাবাদ বাজারে এলাকায় দুটো দোকান টেন্ডার ছাড়াই তাদের দিতে বলা হচ্ছে। পরিকল্পনা করে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে যাতে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে আমি সরে দাঁড়াই। আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণ হলে আমি ভরা বাজারে গিয়ে কান ধরে উঠবস করে পদত্যাগ করব। বসিরহাটের তৃণমূল বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় টাকি পুরসভায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, একটা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে যা দলের উচ্চ নেতৃত্ব জানেন।তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন এর সমাধান হবে।আমার দৃঢ় বিশ্বাস ওই কাউন্সিলররা দলেই থাকবেন।ভুল বোঝাবুঝি মিটে যাবে।