পারিজাত মোল্লাঃ বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে -‘ আগামী ১৭ আগস্ট পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থীদের জয় নিয়ে চুড়ান্ত নির্দেশ জারি করা হবে’। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা, ভোট-সন্ত্রাস, কারচুপি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল প্রচুর মামলা। তার জেরে বিজয়ীদের ভাগ্য নির্ধারণে চূড়ান্ত পদক্ষেপ আদালত গ্রহণ করবে বলে আগেই জানিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার এই সংক্রান্ত মামলাতেই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, -‘পঞ্চায়েতে বিজয়ী প্রার্থীদের ভবিষ্যত নির্ধারণ হবে আগামী ১৭ আগস্ট’।
রাজ্যের বিরুদ্ধে ভোটের সময় অসহযোগিতার অভিযোগ এনে এদিন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ১২০০ পাতার রিপোর্ট জমা দিয়েছেন বিএসএফের আইজি। অন্যদিকে ভোটকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনের কাছে যে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল সেই সমস্ত অভিযোগগুলো এবার খতিয়ে দেখতে চান প্রধান বিচারপতি। সমস্ত মূল নথি আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। ওই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরই বিজয়ী প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারণে চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
একই সঙ্গে মামলার শুনানিতে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, -‘রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে প্রাণগুলি চলে গেছে সেগুলি কোনওভাবেই ফেরানো সম্ভব নয়’। অন্যদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে আদালতে কমিশনের বিরুদ্ধে বিরোধী দলনেতার আনা যাবতীয় অভিযোগ এদিন উড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কমিশনের দাবি, -‘মোট ৮২২ কোম্পানী বাহিনীর মধ্যে ভোটের দিন তাঁরা হাতে পেয়েছিলেন ৬৩৭ কোম্পানী বাহিনী’। পুরো বাহিনীকেই ভোটের কাজে বুথে মোতায়েন করা হয়েছিল বলেও এদিন কমিশনের তরফে দাবি করা হয়।
এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের কাছে জানায়, -‘ বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী যে যে অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়’। এমনকি কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার নিয়েও তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। বাহিনী ব্যবহারে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে নারাজ তারা। বরং কমিশনের দাবি, ৮২২ কোম্পানি বাহিনী চাইলেও ভোটের দিন ৬৩৭ কোম্পানি বাহিনী হাতে পেয়েছিল তারা। ১৮৫ কোম্পানি বাহিনীর ঘাটতি ছিল। এই নিয়ে আদালতে হলফনামাও জমা দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।এছাড়া আদালতে তারা এও জানিয়েছে, -‘হাতে পাওয়া সব বাহিনী ভোটের দিন বুথে মোতায়েন করা হয়েছিল’। অন্যদিকে নির্বাচনী কাজে সরাসরিভাবে সিভিক পুলিশকেও ব্যবহার করা হয়নি। আগামী ১৭ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের চূড়ান্ত নির্দেশের পরই পঞ্চায়েত নির্বাচনের জয়ী প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারণ হবে বলে জানা গেছে ।