পুবের কলম প্রতিবেদকঃ ‘মেয়েরা আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত হলে, সেই ঘরের ভেতর ইসলাম প্রবেশ করে। গোটা পরিবারকে উজ্জ্বল করে তোলে। বর্তমান সমাজের পাশ্চাত্য সংস্কৃতি ও অশ্লীলতাকে পিছনে রেখে দ্বীন শিক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছে মেয়েরা।’সোমবার দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিমা কলেজ মেটিয়াব্রুজে বর্ষপূর্তি ও সমাবর্তন অনুষ্ঠানে একথা বলেন মাইনোরিটি কমিশনের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান।
এদিনের অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ছিলেন ইমরান সাহেব। তাঁকে এক সংবর্ধনা স্মারক প্রদান করেন দ্বীনিয়াত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার সেখ হায়দার আলী। তিনি ইমরান সাহেবের প্রশংসায় বলেন, ‘ইমরান সাহেব আমাদের অভিভাবক। তাঁর জন্য আমরা গর্বিত।’
দ্বীনিয়াত মুয়াল্লিমা কলেজ মেয়েদের শিক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এক ছাদের তলায় ইসলামি শিক্ষার পাশাপাশি ডিজিটাল ক্লাসের মাধ্যমে আধুনিক শিক্ষা কম্পিউটার, ইংরেজি, স্বাস্থ্যশিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। এদিনের অনুষ্ঠানে প্রেজেন্টশনের মাধ্যমে হিটস্টোক রোগ নিয়ে করণীয় ও সাবধানতার পাঠ দেন পড়ুয়ারা। ইংরেজির গুরুত্ব তুলে ধরে ইংরেজিতে কথোপকথন করেন তিনজন পড়ুয়া। এছাড়াও, ইসলামি শিক্ষা ও আধুনিক শিক্ষার মেলবন্ধনে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন ছিল। সুললিত কণ্ঠে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করেন এক ছাত্রী।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মাইনোরিটি কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, মেটিয়াব্রুজের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা। ছিলেন হাজী সাহজাহান মোল্লা, শাহনাওয়াজ খান, রব আলি, হাজী জাহাঙ্গির লস্কর, হাজী নূর নবী, জুলফিকার সাহেব, নুরহাসান মল্লিক, মহেশতলা পুরসভার উপ-পুরপ্রধান আবু তালেব মোল্লা, মুহাম্মদ শামিম আকলে-সহ বিশিষ্টজনেরা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে ইমরান বলেন, আমাদের রাসূল হযরত মুহাম্মদ সা. তিনি সমগ্র মানবসভ্যতার পথপ্রদর্শক। আমার খুব ভালো লাগছে দ্বীনিয়াত কলেজ মেয়েদের গড়ে তুলছে। তারা সমাজ গড়ার কাজ করছে। বর্তমান আধুনিক পশ্চিমা সভ্যতা মুসলিম মেয়েদের টার্গেট করছে। টার্গেট করছে অন্য ভারতীয় নারীদেরও। মেয়েদের হিজাব ও শালীন পোশাক পরতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। ৩-৪ হাজার মেয়ে মাথায় ওড়না দিয়ে পশ্চিমবাংলায় পুলিশের সাব-ইনসপেক্টর ও কনস্টেবল পদে পরীক্ষার জন্য আবেদনপত্রে ছবি দিয়েছিল। তাদেরকে পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি। এই ধরনের ঘটনা মুসলিম মেয়েদের অবশ্যই নিরুৎসাহিত করবে।
এদিন পাঁচজন কৃতি ছাত্রীর হাতে মানপত্র এবং মেমেন্টো তুলে দেন আহমদ হাসান ইমরান। এরা হচ্ছেন প্রথম স্থানাধিকারি আনিশা, দ্বিতীয় মিনারা খাতুন, তৃতীয় আফরিনা বেগম প্রমুখ। প্রত্যেকের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে ইমরান বলেন, ইসলামে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছিল মেয়েরা। প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন মা খাদিজা। সবচেয়ে বেশি হাদিস বর্ণনা করেছেন মা আয়েশা। ইসলামের জন্য প্রথম শহীদ হয়েছেন মা সুমাইয়া। তিনি আরও বলেন, ইসলামকে কালিমালিপ্ত করতে ভুল প্রচার করা হচ্ছে। ইসলামের দাওয়াত এবং সঠিক বার্তা মানুষের কাছে পোঁছে দিতে হবে। এজন্য আমাদের অমুসলিম ভাই-বোনেদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াকে শক্তিশালী করতে হবে।