নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: মাদ্রাসা বোর্ডের পরীক্ষায় রাজ্যে ফাজিলে প্রথম স্থান অধিকার করে নজির গড়ল ফাহিম আক্তার। ফাহিম আখতারের প্রাপ্ত নম্বর ৫৬৫। ফাহিম ফুরফুরা ফাতেহাহিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে রাজ্যে প্রথম হয়ে গোটা ফুরফুরা শরীফের মুখ উজ্জ্বল। ফাহিমের অসাধারণ ফলাফলে গোটা পরিবারে মধ্যে যেমন আনন্দের উচ্ছ্বাস বইছে তেমনি আনন্দের উচ্ছ্বাসে ভরপুর তার মাদ্রাসা।
ফাহিমের আব্বা নাসিম আখতার রেলে চাকরি করেন। তার মা মোবাসেরা বেগম নিতান্তই গৃহবধূ। তার ছোট চাচা তামিম আক্তার জঙ্গলপাড়া হাইস্কুলের আরবির শিক্ষক। স্বভাবতই ফাইমের পরিবারে শিক্ষার আলো প্রথম থেকেই প্রজ্জ্বলিত হয়ে রয়েছে।
ফাইন ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। ফুরফুরার বাসিন্দা ফাইম পঞ্চম শ্রেণী থেকে ফুরফুরা ফাতেহাহিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার ছাত্র। পঞ্চম শ্রেণী থেকেই প্রতিবছর সে ক্লাসে প্রথম হয়ে আসছে।
ফাইম জানায়, দিনে ৮ ঘন্টা কি ১০ ঘন্টা এমন নিয়ম করে সে পড়াশোনা করত না। পড়াশোনা করার ব্যাপারে সে প্রতিদিন কোন বিষয়ের কতটা করে পড়া তৈরি করবে তা আগেভাগে ঠিক করে নিয়ে সেভাবেই সে পড়ত। তাতে তার সময় চার ঘন্টাও লাগতে পারতো, ছ ঘন্টাও লাগতে পারত। তার সর্বাধিক প্রিয় বিষয় ইসলামিক থিওলজি, ইসলামিক স্টাডিজ। কলকাতার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবিতে অনার্স নিয়ে ফাহিম উচ্চশিক্ষা লাভ করতে চায়। লেখাপড়ার পাশাপাশি ফাহিম খেলাধুলাও করত। তার প্রিয় খেলা ক্রিকেট। তবে ফোনে গেম খেলার প্রতি তার আসক্তি রয়েছে।
তার এই অসাধারণ ফলাফলের পিছনে পরিবারের সদস্যদের যথেষ্টই অবদান ছিল। সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল তার ছোট চাচা পেশায় জঙ্গলপাড়া হাই স্কুলের আরবির শিক্ষক জনাব তামিম আক্তারের। আরবি বিষয়গুলিতে তার চাচা তাকে সর্বতোভাবে সাহায্য করতেন। একদিকে তার ফলাফলের পিছনে চাচার কৃতিত্ব যথেষ্টই। পাশাপাশি তার আব্বা, মা ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের অবদানও কোন অংশে কম ছিল না।
জাঙ্গিপাড়ার বিডিও তার প্রতিনিধি পাঠিয়ে ইতিমধ্যেই ফাইমের হাতে ফুলের তোড়া, মিষ্টির প্যাকেট ও মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো শুভেচ্ছা পত্র তুলে দিয়েছেন। জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী ফাহিমকে শুভেচ্ছা জানাতে তাদের বাড়িতে আসবেন বলে জানা গেছে। রাজ্য মাদ্রাসা শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন সাহেব ফাহিমের এই অসাধারণ সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।