উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুন্দরবন: সুন্দরবন বলতে আমরা জানি ম্যানগ্রোভ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ আরও কত কিছু। আর সুন্দরবনে ক্রমশ বাঘের সংখ্যা বাড়লেও বাঘের খাবার সেভাবে না থাকায় সংকট তৈরি হচ্ছিল। আর তাই এবার বাঘের খাবার হিসেবে ফের হরিণ ছাড়া হবে সুন্দরবনের জঙ্গলে। ইতিমধ্যেই একশো হরিণ আনা হয়ে গেছে উত্তর ২৪ পরগনার পারমাদনের বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য থেকে। হরিণগুলিকে বর্তমানে রাখা হয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের দোবাঁকি ক্যাম্পে।
মাস দু’য়েক এই সুন্দরবনের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পরে এই হরিণগুলিকে ছেড়ে দেওয়া হবে সুন্দরবনের গভীর অরণ্যে। বন দফতর সূএে জানা গেল, বাঘের খাবার যাতে কম না পড়ে, সে জন্যই এই উদ্যোগ। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, এটা নতুন নয়, আগেও বাইরে থেকে হরিণ এনে সুন্দরবনের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছে। জঙ্গলে বাঘের খাবারের ঘাটতি মেটাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত কয়েক মাসে জঙ্গল-লাগোয়া নদী, খাঁড়িতে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণের শিকার হয়েছেন মৎস্যজীবীরা।
জঙ্গলে পর্যাপ্ত খাবার থাকলে এই আক্রমণও কিছুটা কমতে পারে বলে অনুমান তাঁদের। সর্বশেষ ব্যাঘ্র সুমারির রিপোর্ট অনুযায়ী, সুন্দরবনের জঙ্গলে ৯৬টি বাঘ ছিল। গত বছর সারা দেশের সঙ্গে সুন্দরবনেও নতুন করে বাঘ গণনার কাজ হয়েছে। ইতিমধ্যেই জঙ্গলের মধ্যে বসানো স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরায় ওঠা ছবি বিচার-বিশ্লেষণ করে বর্তমানে সুন্দরবনের জঙ্গলে বাঘেদের সংখ্যা বেশ কিছুটা বেড়েছে বলেই মনে করছে বন দফতর।
এই শীতে বারবার সুন্দরবনের জঙ্গলে বাঘের দেখা ও পেয়েছেন পর্যটকেরা। বাঘিনীকেও নদীর পাড়ে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। তা থেকেও বনাধিকারিকেরা নিশ্চিত বাঘের সংখ্যা আগের তুলনায় কিছুটা হলেও বেড়েছে। বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গলে যাতে তাদের খাবারে টান না পড়ে, তাই নতুন করে সুন্দরবনের জঙ্গলে হরিণ ছাড়ার পরিকল্পনা করেছে বন দফতর।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর অজয় দাস বলেন,গত মাসে ১০০ হরিণ নিয়ে আসা হয়েছে সুন্দরবনে। সেগুলিকে আর ও মাস দেড়েক এখানে রাখা হবে সুন্দরবনের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য। তারপরেই বাঘেদের খাবার হিসেবে এগুলিকে জঙ্গলে ছাড়া হবে।
আগের তুলনায় বাঘের সংখ্যা বেশ খানিকটা বৃদ্ধি পেয়েছে সুন্দরবনে। তাই নতুন করে হরিণ ছাড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আর সেই মতো সুন্দরবনে সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।