পুবের কলম প্রতিবেদকঃ কলকাতার স্বাস্থ্য চিত্রে ধরা পড়ল ভয়াল ছবি। কার্যত নিঃশব্দে খাস কলকাতার বুকে মহামারির আকার নিতে চলেছে টিবি। প্রতি বছর ডেঙ্গু কিংবা ম্যালেরিয়া আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কম জলঘোলা হয় না। কিন্তু এবার খাস কলকাতা পুরনিগমের রিপোর্টে যে ভয়াল ছবি উঠে এসেছে তা বুকে কাঁপুনি ধরিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।
পুরনিগমের তথ্য বলছে, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শহরে টিবিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩, ৩১৬। মৃতের সংখ্যা ২৭২।
শুক্রবার ছিল বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। কার্যত সেই কারণেই সামনে এসেছে কলকাতার এই চিত্র। যদিও পুরনিগমের দাবি, গত ক’বছর ধরেই শহরে যক্ষার প্রাদুর্ভাব বাড়লেও তার ওপর কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। আর তাই যারাই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদেরই দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।
২০২২ সালে যারা যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই চিকিৎসাধীন কিংবা সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। যারা মারা গিয়েছেন তাঁরা নিজেদের রোগ লুকিয়ে রাখায় মারা গিয়েছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজেদের গাফিলতিও দায়ী যার মধ্যে অন্যতম হল বিনামূল্যে পাওয়া ওষুধ নিয়মিত না খাওয়া। সেই সঙ্গে মদ্যপান ও ধূমপান না ছাড়া।
তবুও পুরনিগম এই রোগ নিয়ে মানুষকে সচেতন করার কাজ করে চলেছে। শহরের ৬০টি জায়গায় পথনাটকের মাধ্যমে ১৩ দিনের বিশেষ সচেতনতা প্রচার চালানো হচ্ছে যক্ষা ও তার চিকিৎসা তথা নিরাময় নিয়ে। তবে তারপরেও এই রোগ যেভাবে দ্রুত হারে শহরে ছড়িয়ে পড়ছে তা নিয়ে রীতিমত উদ্বিগ্ন পুরনিগমের স্বাস্থ্যকর্তারা।
কলকাতা পুরনিগমের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দাবি, এই বিষয়ে প্রচার আরও জোরদার প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ১৩ মার্চ থেকে শহরজুড়ে চলছে পথনাটিকা-প্রচার। যেহেতু উত্তর এবং মধ্য কলকাতায় এই রোগের প্রকোপ বেশি তাই সেখানে এই ধরনের প্রচার চালানো হচ্ছে বেশি করে।
এছাড়াও গার্ডেনরিচ, বেলগাছিয়া, কাশিপুর, বেলেঘাটা, ট্যাংরা, তপসিয়া, গড়িয়া, বেহালার বিভিন্ন ঘনবসতিপূর্ণ জনবসতি ও বাজার অঞ্চলে পথনাটকের মাধ্যমে সচেতনতা প্রচারকাজ চালানো হচ্ছে।