তালিবানের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রথমে নিজেদের ওপরই তারা শরিয়াহ আইন প্রয়োগ করতে চান। এভাবে সমাজের বাকিদের জন্য একটি উদাহরণ তৈরি হবে। অর্থাৎ তালিবানের মধ্যে কেউ দোষ করলে তাকে আগে বিচারের আওতায় আনা হবে।
পুবের কলম,ওয়েবডেস্কঃ ‘সাদা কুর্তাপায়জামা পরিহিত দাড়িওয়ালা লোকগুলোকে দেখে আতঙ্কিত বিশ্ব। কিন্তু এই আতঙ্কের কী সত্যিই কোনও কারণ রয়েছে’ তালিবান একটি সন্ত্রাসী দল, তারা মানুষ খুনে অভ্যস্ত, মহিলাদের স্বাধীনতা হরণে সিদ্ধহস্ত এসব লিখে যারা খবর প্রচার করছেন তারা হয়তো শরিয়াহ আইন বিষয়ে খুব ভালো ধারণা রাখেন না। বলাই যায়, পশ্চিমা প্রোপাগাণ্ডার শিকার হয়ে চলেছে তালিবান। তাই তালিবান নিয়ে যত অপপ্রচার চলছে মিডিয়ায়। আগামীতে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে যাদের এত চিন্তা, আফগানদের দুর্দশা দেখে যাদের এত দরদ, তাদের কাছে একটাই প্রশ্ন ২০ বছর আগে দেশটিতে আমেরিকা যখন মানুষ মারার খেলা শুরু করেছিল তখন কোথায় ছিল তারা? সে যাই হোক, তালিবান এখন শীর্ষ নেতাদের নিয়ে সরকার গঠনের পরিকল্পনা করছে। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগকে যুক্তি দিয়ে নাকচ করছে এবং মানুষের মন থেকে ভীতি দুর করার চেষ্টা করছে। যেসকল আফগান তালিবানের কড়া অনুশাসনের ভয়ে আছেন তাদের আশ্বাস দিয়েছে তালিবান।
তালিবানের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রথমে নিজেদের ওপরই তারা শরিয়াহ আইন প্রয়োগ করতে চান। এভাবে সমাজের বাকিদের জন্য একটি উদাহরণ তৈরি হবে। অর্থাৎ তালিবানের মধ্যে কেউ দোষ করলে তাকে আগে বিচারের আওতায় আনা হবে। কাবুল দখলের পর প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকারে তালিবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য আবদুল কাহার বলখি বলেন, ‘আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় আফগানদের বিমানবন্দরে ছুটে আসার ব্যাপারটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তাদের আতঙ্ক ও হিস্টিরিয়া একেবারে ভিত্তিহীন। কারণ আমরা সবার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে।’
তালিবান সন্ত্রাসী দল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের এই মুখপাত্র বলেন, ‘মানুষ জানে আমরা সন্ত্রাসী নই, বরং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিভাষাটি ছিল যুক্তরাষ্টÉ কর্তৃক প্রণীত একটি বাক্য। কেউ তাদের ধারায় না পড়লে তাকেই তারা সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে।’
কাবুল বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে বালখি বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আমরা যুক্তরাষ্টেÉর সঙ্গে কথা বলছি, এক সঙ্গে কাজ করছি। বিমানবন্দরের বাইরে চেকপোস্ট আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ভেতরের বিষয়টি যুক্তরাষ্টেÉর সেনারা দেখছেন। আমরা প্রতিনিয়ত নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি।
কাবুল দখলের এক সপ্তাহ পরেও দেশটির সরকার গঠনে কোনও স্পষ্ট ঘোষণা না আসায় দেশটির ভেতরে বাইরে আশঙ্কা একটা রয়েই গেছে। তবে এক্ষেত্রে তালিবান ধীরে ধীরে তাদের কিছু নীতি স্পষ্ট করছে। সরকারি চাকরি, নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান সংস্কৃতিসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা তাদের অবস্থান স্পষ্টভাষায় প্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক মহল থেকেও স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা চলছে। তবে সরকার কীরকম হবে তা নিয়ে তালিবান ও দেশটির প্রাক্তন সরকারি আধিকারিকরদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। দেশের রাজধানী কান্দাহার হবে না কাবুল তা নিয়েও কথা চলছে।