সেখ কুতুবউদ্দিনঃ নামে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। দুটি ঘর। একতলা বিল্ডিং। রাজ্য বা কেন্দ্রীয় বোর্ডের অনুমোদনও নেই। তবুও রমরমিয়ে চলছে বহু স্কুল। শিক্ষার গুণগত মানও ভালো নয়, তবে ক্লাস নিয়মিত। এই হিড়িকে অতি সাধারণ ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াতে পিছপা হচ্ছেন না অভিভাবকরা। হিড়িক পড়েছে—এই স্কুলে পড়াতে হবে ছেলেমেয়েদের।
ঠিক এই সময় রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পিছিয়েপড়া ব্লকগুলিতে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল গড়ার উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার।
নবান্ন সূত্রের খবর, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলি গড়ে উঠবে রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতর ও শিক্ষা দফতরের উদ্যোগে। এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ করবে রাজ্যের স্কুলসার্ভিস কমিশন (এসএসসি)।
এক সূত্রের খবর, সংখ্যালঘু পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি, এমন এলাকায় রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতর গড়বে ৩৮টি স্কুল ।
আর, পিছিয়েপড়া এলাকায় শিক্ষা দফতর গড়বে ১০০টি স্কুল। প্রতিটি স্কুলের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৫ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা।
শিক্ষা দফতর জানিয়েছে স্কুল তৈরির কাজ শুরু শুরু হবে। ২০২৪ সালের শেষের দিকে পঠনপাঠন চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক।
শিক্ষকদের মতে, বাংলা মাধ্যম স্কুল ছেড়ে অনেকেই বেসরকারি ইংলিশ মিডিয়ামে ভিড় জমাচ্ছে। এতে অভিভাবকদের মেটাতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। বেসরকারি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তির প্রতিযোগিতায় রাজ্যের মধ্যবিত্ত পরিবারের পড়ুয়ারা রীতিমতো পিছিয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ।
সেই পড়ুয়াদের সুযোগ দিতে রাজ্য সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে ৬৫টি স্কুলে ইংলিশ মিডিয়াম চালু করার উদ্যোগ নিয়েছিল। রাজ্যে ইংরেজি মাধ্যম কিছু স্কুল চালু করা হয়।
কলকাতার টাকি গর্ভমেন্ট স্পনসর, বেহালার সৌরিন্দ্র হাই স্কুল সহ বিভিন্ন জেলার স্কুলগুলিতে ইংলিশ মিডিয়ামের পঠনপাঠন চালু হয়েছে। এতে ভালো ফল মিলছে বলে মত শিক্ষকদের।
ইংরেজি স্কুলের শিক্ষণ পদ্ধতি প্রসঙ্গে এই স্কুলের শিক্ষকদের বক্তব্য, শিক্ষা দফতরের ইংরেজি মাধ্যমের সিলেবাসকেই অনুসরণ করা হচ্ছে।
বেশিরভাগ ছাত্র বাংলা মাধ্যমের। তাই ‘ইংলিশ টার্ম’ না বুঝলে তাদের বাংলাতে বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের আরও বক্তব্য, পড়ুয়াদের ভর্তি করার জন্য এ’নও অভিভাবকরা ভিড় জমাচ্ছেন।
সরকার পরিচালিত সৌরিন্দ্র স্কুল ছাড়াও কলকাতায় ১২ টি বিদ্যালয়ে ইংলিশ মিডিয়াম চালু করা হয়েছে। সব স্কুলেই অভিভাবকদের ব্যাপক সারা মিলছে। সংখ্যালঘু দফতরের এক আধিকারি পুবের কলমকে বলেন, এর আগে বিভিন্ন জেলার সংখ্যালঘু এলাকার পড়ুয়াদের জন্য বহু স্কুল কলেজে হস্টেল তৈরি করেছে।
এখন স্কুল গড়ার কাজে শিক্ষা দফতর ও রাজ্য সংখ্যালঘু দফতর পরিকাঠামো তৈরিতে একযোগে কাজ করবে।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুল গড়ার কাজের ‘বর পেয়ে অভিভাবকরাও খুশি। পঠনপাঠন শুরু হলে পিছিয়েপড়া এলাকার পড়ুয়ারা উপকৃত হবেন বলে মনে করছেন শিক্ষক, অভিভাবক ও বিশিষ্টরা।