পারিজাত মোল্লা: জেল হেফাজতে থাকা বীরভূমের দাপুটে নেতা অনুব্রত মন্ডলকে কেন্দ্রীয় হাসপাতালে নিয়ে যাবে রাজ্য পুলিশ। তারপর দায়িত্ব নেব ইডি। ধোঁয়াশা কাটিয়ে দিল পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল সিবিআই এজলাস। তাই কেষ্টর দিল্লি যাত্রা নিয়ে জট কাটল। সোমবার আসানসোল সিবিআই এজলাস স্পষ্ট করে দিল, ‘ অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক পরীক্ষা করানো পর্যন্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে জেল কর্তৃপক্ষ, তার নিরাপত্তার জন্য বাহিনী মোতায়েন করতে হবে আসানসোল পুলিশকে। শারীরিক পরীক্ষার পর অনুব্রত মণ্ডলকে ইডি-র হাতে তুলে দেওয়া হবে’।
অর্থাৎ মেডিক্যাল করানোর আগে পর্যন্ত যাবতীয় দায়িত্ব জেল কর্তৃপক্ষের। নিরাপত্তার বিষয়টা নিশ্চিত করতে হবে আসানসোল পুলিশকে।
এদিন আসানসোল সিবিআই আদালতে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী নির্দেশে জানান , -‘ হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকরী হবে। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটকে এসকর্ট দিয়ে অনুব্রতকে নিয়ে যেতে হবে। সেন্ট্রাল হাসপাতালে অনুব্রতর শারীরিক পরীক্ষা হবে। তারপর সেখান থেকে ইডির দায়িত্বে গোটা বিষয়টি চলে যাবে’।সোমবার সকালে অবশ্য রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা বাহিনী না দেওয়ার বিষয়টি নস্যাত্ করে দেয়।
রাজ্য পুলিশের দাবি -‘ তারা কখনই বলেনি, যে বাহিনী দিতে পারবে না। জেল কর্তৃপক্ষ বাহিনী চেয়ে যে আবেদন করেছে, সেখানেই রয়েছে গলদ। জেল কর্তৃপক্ষের তরফে স্পষ্ট করে বলা হয়নি, তারা পুলিশ বাহিনী কী কারণে চাইছেন, কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যেতে চাইছেন,আসানসোল থেকে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার জন্য বাহিনী চাইছে, নাকি দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য এসকর্ট টিম চাইছেন, তা চিঠিতে স্পষ্ট করে বলা ছিল না ‘। চিঠিতে স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই বলেই বাহিনীর বিষয়টা নিয়ে একটা গোলমাল তৈরি হয়েছে।
অনুব্রতকে কবে দিল্লি নিয়ে যেতে হবে, সেক্ষেত্রে কোনও সময় উল্লেখ করে দেয়নি কলকাতা হাইকোর্ট। আসানসোল সিবিআই এজলাসের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীও হাইকোর্টের নির্দেশকে কোট করে স্পষ্ট করে দেন, -‘যত দ্রুত সম্ভব অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে হবে ইডিকে’।ইতিমধ্যেই ডিসিপি সেন্ট্রাল এসএস কুলদীপ আইনি পরামর্শ নিতে এসেছিলেন আসানসোল সিবিআই আদালতে।অনুব্রতর ফিটনেস সার্টিফিকেট পাওয়ার পরই জেল কর্তৃপক্ষ ইডি-কে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে।
অর্থাৎ আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক জেল, কমিশনারেট ও ইডি-র মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন।
বিচারক জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, এইচআইইউ অর্থাত্ গরু পাচার মামলায় তদন্তকারী আধিকারিক পঙ্কজ কুমারের সঙ্গে ফোন ও ইমেল মারফত যোগাযোগ করতে।
ইডি কোন হাসপাতালে কবে অনুব্রতর মেডিক্যাল করাতে চায়, তা যেন জেল কর্তৃপক্ষ পঙ্কজ কুমারের সঙ্গে কথা বলে জেনে নেয়। নির্দিষ্ট দিন, নির্দিষ্ট সময় জানাতে হবে। সিবিআই আদালতের জজ সাহেব পরিষ্কার করে দিলেন, জেল কর্তৃপক্ষ অনুব্রতর মেডিক্যাল করাবে।
এই সময় পর্যন্ত পুলিশ এসকর্ট দেবে। এরপর থেকে ইডির হাতে দায়িত্ব।আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার অনুব্রতের গতিবিধির উপর তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।