পারিজাত মোল্লাঃ মঙ্গলবার এবং বুধবার টানা দুদিন কলকাতা হাইকোর্টে একপ্রকার শুনানি হয়নি। গত মঙ্গলবার রাজ্যের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল নরনারায়ণ গুপ্তের প্রয়াণে হাইকোর্টে শুনানি প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। এরপর আরেক প্রবীণ আইনজীবীর মৃত্যুতে বুধবারও সেই অচলাবস্থা রইল। এতে বিচারপ্রার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। পরপর দু’দিন কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানি প্রক্রিয়া স্তব্ধ। এতে ফের অসন্তুষ্ট প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে কলকাতায় প্রয়াত হন রাজ্যের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল নরনারায়ণ গুপ্ত। তাঁর মৃত্যুতে হাইকোর্টের নিয়ম অনুযায়ী মঙ্গলবার শুনানি প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন ।
এই ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি রাজ্যের এজি সহ অন্য আইনজীবীদের প্রশ্ন করেন, সারাদিন নষ্ট কেন ? দুপুর সাড়ে তিনটে থেকে আপনারা এই সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন।” তিনি এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, “এই ধরনের সিদ্ধান্ত কেন ? প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেলের মৃত্যুতে আমিও দুঃখিত। কিন্তু সারাদিন আদালতের সময় নষ্ট না করে অর্ধদিবস কাজ বন্ধ রাখলে ভাল হত না ? বিষয়টা পুনর্বেবিবেচনা করুন।”
এরপর বুধবার সকালে আদালত কাজকর্ম শুরু হওয়ার কিছু সময় পরই আরেক বর্ষীয়ান আইনজীবীর মৃত্যুর খবর আসে।
জানা গিয়েছে, বরিষ্ঠ ব্যারিস্টার শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে বুধবার ফের আইনজীবীরা শুনানিতে যাতে অংশগ্রহণ না করেন, সেই মর্মে বার অ্যাসোসিয়েশন-এর তরফে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ক্ষুব্ধ হন এবং বলেন, “এটা কী হচ্ছে? এতে বিচারপ্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আইনজীবী শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে হাইকোর্ট বার লাইব্রেরির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে বুধবার আইনজীবীরা কোনও সওয়াল পর্বে অংশগ্রহণ করবেন না।
তবে এদিন প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও আইনজীবী যদি সাওয়াল করতে চান, তাহলে তিনি তা করতে পারেন। দু’পক্ষের আইনজীবী উপস্থিত না থাকলে আদালত কোনও রায়দান করবে না।
কলকাতা হাইকোর্টের স্বনামধন্য আইনজীবী বৈদূর্য ঘোষাল জানান, ”এটি আমাদের প্রাচীন রীতি, শুধু হাইকোর্ট নয় রাজ্যের সমস্ত নিম্ন আদালতে আইনজীবী মারা গেলে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতে শুনানি প্রক্রিয়া বন্ধ থাকে”।