বিশেষ প্রতিবেদকঃ সমগ্র আফগানিস্তান-সহ পুরো কাবুল এখন তালিবানদের দখলে। বলা যায় বিশ সাল বাদ। তালিবানদের বড় কৃতিত্ব হল– তারা বিশেষ কোনও রক্তপাত না করে কাবুল-সহ আফগানিস্তান দখল করেছে। তবে কাবুলে যে রক্তপাত একেবারেই হয়নি– তা কিন্তু নয়। নতুন করে মার্কিন সেনারা এসেছে কাবুল বিমানবন্দরে তাদের গুলিতে সোমবার এখনও পর্যন্ত ৫ জনের নিহত হওয়ার খবর রয়েছে। এছাড়া মার্কিন সেনারা ঠিকমতো নির্গমন ম্যানেজ করতে না পারায় কাবুল বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খলা চরমে ওঠে। বহু আফগান তালিবানদের ভয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার জন্য এমনকি বিমানের পাখায় উঠে পড়ে। এছাড়া উড়ন্ত বিমান থেকে ৩ জন নিচে পড়ে যায়। তাদের কি অবস্থা এখনও ঠিকমতো জানা যায়নি।
তালিবান অগ্রাভিযানের খবর যারা টিভিতে দেখছেন– পত্রিকায় পড়ছেন তাদের অনেকের কাছে মনে হবে ব্যাপারটা যেন আকস্মিকভাবে– যেন চোখের পলকে ঘটে গেল।
এক বিধ্বংসী সামরিক অভিযানে ২০০১ সালে মোল্লা ওমর পরিচালিত তালিবানকে ক্ষমতাচু্যত করার পর গত ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানের সামরিক নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও তার ন্যাটো মিত্ররা। কিন্তু এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টে গেছে।
জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে রাতের অন্ধকারে প্রায় চুপিসারে যখন মার্কিন সৈন্যদের শেষ দলটি কাবুলের নিকটবর্তী বাগরাম বিমানঘাঁটি ত্যাগ করে তার মাত্র ৬ সপ্তাহ পার হতে না হতেই আফগানিস্তানের প্রায় সব ভূখণ্ড দখল করে নিয়েছে তালিবান।
সমস্ত প্রাদেশিক রাজধানী ইতিমধ্যেই তালিবানের দখলে চলে গেছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে হেরাত– কান্দাহার– মাজার শরীফ ও জালালাবাদের মত গুরুত্বপূর্ণ শহর।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এক মূল্যায়নে বলা হয়েছিল– আফগান নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে ভেঙে পড়েছে তাতে কয়েক মাস বা এমনকি কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই কেন্দ্রীয় রাজধানী কাবুলের পতন হতে পারে। কিন্তু এই মূল্যায়ণকে নস্যাৎ করে দিয়ে রাজধানী কাবুলের পতন হয়েছে। আর তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে প্রায় ৬ হাজার মার্কিন সেনাকে কাবুলে বিমানবন্দরে পাঠিয়েছে। উদ্দেশ্য– মার্কিন নাগরিক– কূটনীতিবিদ এবং আশ্রিতদের নিরাপদে আফগানিস্তান থেকে বের করে নেওয়া সম্ভব হয়।
শুধু তাই নয়– মার্কিন পত্র-পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে যে তাদের দূতাবাসটি বিমানবন্দরের মধ্যে বা কাছে কোথাও সরিয়ে নেওয়া যায় কিনা সে বিকল্পটিও আলোচনা করেছে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসন। আর সেই অনুযায়ী মার্কিন দূতাবাসের পতাকা নামিয়ে তাকে কাবুল বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারণ হচ্ছে– যদি ব্যাপক কোনও অশান্তি হয় তা হলে মার্কিন কর্মকর্তারা যেন বিমানবন্দর থেকে পালিয়ে যেতে পারে। এদিকে মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বা আফগানিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারির খবর অনেকক্ষণ পাওয়া যায়নি। পরে জানা যায়– তিনি পালিয়ে কাবুল বিমানবন্দরে হাজির হয়েছেন।
নিউইয়র্ক টাইমস এক রিপোর্টে জানিয়েছে– তালিবান যেন কাবুলের মার্কিন কর্মকর্তাদের উপর হামলা না চালায় সে জন্য মার্কিন আলোচকরা এর মধ্যেই তালিবানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
মার্কিন রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা এখন বলছেন যে– ১৯৭৫ সালে যেভাবে ভিয়েতনামের সায়গন থেকে পরাজিত আমেরিকানদেরকে হেলিকপ্টারে করে তড়িঘড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল– ২০২১ সালের কাবুলে এখন সেই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটছে।
কাবুলের পতন মানে কি পরাজয়ের চূড়ান্ত বিন্দু?
আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সেনা প্রত্যাহারকে অনেক বিশ্লেষকই সমর্থন করেছেন। সাম্প্রতিক জনমত জরিপগুলোতে দেখা যায়– মার্কিন জনগণের অধিকাংশের মধ্যেও এর প্রতি সমর্থন আছে।
কিন্তু প্রেসিডেন্ট বাইডেন সৈন্য প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করার পর তালিবানের কিছু নেতা বলেছেন– তারা এ যুদ্ধে জিতেছেন আর আমেরিকা হেরে গেছে।
অন্য অনেক বিশ্লেষকও একে আমেরিকার ‘পরাজয়’ ও ‘পশ্চাদপসরণ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তারা বলছেন– আফগানিস্তান থেকে এমন এক সময় মার্কিন বাহিনী বিদায় নিচ্ছে– যখন তাদের অর্জন হিসেবে দেখানোর কিছুই প্রায় নেই। এটা ঠিক যে আলকায়েদাকে উৎখাতের কথা বলে এ অভিযান শুরু হয়েছিল তারা এখন তত শক্তিধর নয়– ওসামা বিন লাদেনও নিহত কিন্তু আশ্রয়দাতা তালিবান এখন প্রবলভাবে ফিরে এসেছে।
এখন তালিবানদের হাতে কাবুলের পতনের পর মার্কিন রিপাবলিকান সেনেটর মিস ম্যাককনেল বলেছেন– বাইডেন প্রশাসনের স্ট্রাটেজি যুক্তরাষ্ট্রকে এক লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে ফেলল।
তাঁর কথায়– প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রকে ১৯৭৫ সালের সায়গনের অপমানজনক পতনের চাইতেও খারাপ অবস্থায় নিয়ে গেছে।
ক্ষয়ক্ষতি ও নিহতদের সংখ্যা
দু’দশকব্যাপি এই আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি হিসেব মতে ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ ব্যয় করেছে– এতে নিহত হয়েছে তাদের ২–৩১২ জন সৈন্য– জখম হয়েছে ২০ হাজারের বেশি– আফগান সৈন্য ও পুলিশ নিহত হয়েছে আনুমানিক ৬৪–০০০ আর আফগান বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে অন্তত ১১–১–০০০। তাই কাবুলের পতনকে এখন অনেকে দেখছেন আফগানিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ প্রয়াসের পরাজয়ের চরম মুহূর্ত হিসেবে।
কিন্তু কীভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি হল?
‘বহু বছর ধরে– একটু একটু করে আফগানিস্তানে হেরেছে যুক্তরাষ্ট্র। ঘটনাপ্রবাহ দেখে মার্কিন বিশ্লেষকরাও এখন বলছেন– মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয় আসলে আকস্মিক কিছু নয়– এটা ঘটেছে বহু বছর ধরে একটু একটু করে।
মার্কিন সাংবাদিক ও বিশ্লেষক ফরিদ জাকারিয়া শুক্রবারই সিএনএনএ এক অনুষ্ঠানে বলেছেন– তালিবানের এই পুনরুত্থান আকস্মিক নয়– বরং গত ১০-১৫ বছর ধরেই তালিবানদের ধীরে ধীরে শক্তিবৃদ্ধি হচ্ছিল।
আফগানিস্তানে ২০০১ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হওয়া মার্কিন বাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণে তালিবানের পতনের পর কাবুলে অনেক তরুণের দাড়ি কামিয়ে ফেলার দৃশ্য টিভির পর্দায় দেখানো হয়েছিল। কিন্তু আসলে তালিবানরা কখনোই সম্পূর্ণ পরাজিত হয়নি।
আফগানিস্তানে বিপুল পরিমাণ বিদেশি সৈন্যের উপস্থিতি সত্ত্বেও তালিবান আবারও সংগঠিত হয়ে ক্রমাগত তাদের শক্তি বাড়ায়– আফগানিস্তানের নানা অঞ্চলে আবার তাদের প্রভাব বিস্তার করে।
আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে তারা বিপজ্জনক করে তুলেছিল এবং তাদের চোরাগোপ্তা বা আত্মঘাতী আক্রমণ– ঘরে তৈরি বোমা বিস্ফোরণ ও সহিংসতা বছরের পর বছর ধরে অব্যাহতভাবেই চলছিল।
কাবুলে তারা বহু হামলা চালিয়েছে এবং ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে তালিবান এমনকি ন্যাটো জোটের ক্যাম্প বাস্টিয়ন ঘাঁটিতেও এক বিরাট দুঃসাহসিক অভিযান চালায়।
অন্যদিকে তালিবানের ওপর মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীর বিমান হামলায় নিহত হয় অসংখ্য বেসামরিক আফগান যা মার্কিন সামরিক প্রয়াস সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্নের জন্ম দেয়।
বহু এলাকা তালিবানের নিয়ন্ত্রণ ফিরে আসে
তালিবানের প্রাধান্য মূলত কেন্দ্রীভূত ছিল আফগানিস্তানের দক্ষিণে এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে তাদের বরাবরের শক্ত ঘাঁটিগুলোর আশপাশের এলাকায় এবং উত্তরে হেলমান্দ– কান্দাহার– উরুযগান এবং জাবুল প্রদেশে। এছাড়াও উত্তর-পশ্চিমের ফারিয়াব পর্বতমালা ও উত্তর-পূর্বের বাদাখশানের পাহাড়ি এলাকাতেও তাদের প্রাধান্য ছিল বেশি। ২০১৭ সালে করা এক গবেষণায় দেখা যায়– আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি জেলা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছে তালিবান। ওই গবেষণায় আরও দেখা যায়– দেশের আরও বহু এলাকায় তারা বেশ সক্রিয়– যেখানে কিছু কিছু এলাকায় তার প্রতি সপ্তাহে বা প্রতি মাসে হামলা চালাতো। তাতে এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে– আগে যা ধারণা করা হতো– তালিবানের শক্তি তার চেয়ে অনেক বেশি ছিল।
আফগানিস্তানে মাদক ব্যবসার জন্য পপি চাষ হয় এমন বহু এলাকাও তালিবান নিয়ন্ত্রণ করে এবং এ থেকে তাদের প্রতিবছর কোটি কোটি ডলার আয় হয় বলে পশ্চিমারা ধারণা করে।
আর তালিবানের তৎপরতার পিছনে পাকিস্তানের গোপন সহযোগিতা ও আশ্রয় প্রশ্রয়ের অভিযোগ বহু পুরনো। যদিও পাকিস্তান তা স্বীকার করে না। মার্কিন ও ন্যাটো সেনাবাহিনী ও আফগান সরকারি বাহিনী কখনোই তালিবানের বিদ্রোহী তৎপরতা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।
মার্কিন সামরিক তৎপরতা ব্যর্থ হচ্ছিল
ওয়াশিংটন পোস্টে সাংবাদিক বিশ্লেষক ইশান থারুর লিখেছেন– তালিবানের আক্রমণের মুখে আফগানিস্তান যেভাবে এত দ্রুতগতিতে ভেঙে পড়ছে– তা যুক্তরাষ্টেÉর এক দীর্ঘ ও ধীরগতির পরাজয়।
তাঁর মতে– ২০০১ সালে তালিবান যখন ক্ষমতাচু্যত হয়েছিল– তার পরবর্তী ২০ বছরের মধ্যে এখনই তারা সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
তিনি বলছেন– পরিস্থিতি যে এমন হতে পারে তার আভাস অনেক আগেই পাওয়া গিয়েছিল। আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক তৎপরতা এবং দেশগঠনের প্রক্রিয়া যে ব্যর্থ হচ্ছে– তা অনেক দিন আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের শিক্ষক এবং আফগান রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড. আসিম ইউসুফজাই বলেছেন– আমেরিকানদের কৌশল ছিল আফগানিস্তানের প্রধান শহরগুলোকে কবজায় রাখা। কিন্তু শহরের বাইরে গ্রামগঞ্জ তালিবানের নিয়ন্ত্রণে থেকে গিয়েছিল। কিন্তু মার্কিন রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব তা স্বীকার করতে চাননি।
ক্রেগ হুইটলকের সেই রিপোর্ট
মার্কিন প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ বহু দলিলপত্রের বয়ান প্রকাশ করে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এক সাড়া জাগানো রিপোর্ট করেছিলেন ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক ক্রেগ হুইটলক।
আফগানিস্তান পেপার্স এ সিক্রেট হিস্ট্রি অব দ্য ওয়ার এ্যাট ওয়ার উইথ দ্য ট্রুথ শিরোনামের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে তিনি দেখিয়েছিলেন যে– মার্কিন কর্মকর্তারা মুখে যতই বলুন না কেন যে তারা আফগানিস্তানের পরিস্থিতির অগ্রগতি ঘটাচ্ছেন– তা আসলে সঠিক ছিল না। ওই কর্মকর্তারাও জানতেন যে– কোন অগ্রগতি হচ্ছে না। ক্রিগ হুইটলক লিখেছিলেন– একের পর এক মার্কিন প্রশাসন এটা স্বীকার করে নিয়েছিল যে– তালিবানকে হারানো সহজ হবে না– আফগান রাষ্ট্র দুর্বল এবং দুর্নীতিতে ভরা– তাই কোন সমন্বিত নীতি ছাড়া এগিয়ে যাওয়াটাও পরাজয় স্বীকার করে নেওয়ার চাইতে ভাল।
হুইটলক ব্যাখ্যা করেছিলেন যে– বহু অপ্রকাশিত দলিলপত্র ও সাক্ষাৎকার থেকে এটা বোঝা যায় যে– তিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ– বারাক ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনগুলো দুই দশক ধরে এ সত্যকে লুকিয়ে রেখেছিল। যে যুদ্ধের প্রতি এক সময় আমেরিকানদের বিপুল সমর্থন ছিল– সে যুদ্ধে তারা ধীরে ধীরে হেরে যাচ্ছিলেন। হুইটলক বলেন– এটা স্বীকার না করে বরং সামরিক ও রাজনৈতিক নেতারা তাদের ভুলগুলো লুকানোর বিকল্পটিই বেছে নেন এবং যুদ্ধটিকে হাতছাড়া হতে দেন।
কোনও প্রেসিডেন্টই আফগানিস্তানে বিপর্যয়ের কথা স্বীকার করেননি। ক্রেগ হুইটলক তাঁর রিপোর্টে বলেন– প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ প্রাথমিক সতর্কবাণী ধামাচাপা দিয়ে আফগান যুদ্ধকে উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। আফগানিস্তানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে সৈন্য সংখা ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে ছিলেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ওবামা। তাঁর সময় এক পর্যায়ে মার্কিন সৈন্য সংখ্যা ১–১০–০০০-এ উঠেছিল। এর ফলে ২০০৯ সাল নাগাদ তালিবানকে অনেকটা পিছনে ঠেলে দেওয়া সম্ভব হয়েছিল– কিন্তু তাও দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়নি। বছরের পর বছর ধরে তালিবান আক্রমণ চলতেই থাকে। সবচেয়ে রক্তাক্ত বছর ছিল ২০১৪ সাল। সেই বছরই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উপস্থিতিতে কাবুলে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীর হেডকোয়ার্টারে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জানানো হয়– আফগানিস্তানে তাদের ‘কমব্যাট মিশন’ বা প্রত্যক্ষ সামরিক তৎপরতা শেষ হচ্ছে– এবং আফগান সেনাবাহিনী ও পুলিশই তাদের দেশের নিরাপত্তার দায়িত্ব হাতে নিচ্ছে। মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী শুধু প্রশিক্ষক ও পরামর্শক হিসেবে থাকবে। কিন্তু আসলে যুদ্ধের আদৌ কোন সমাপ্তি হয়নি। বরং এ সময় তালিবান কিছু ভূখণ্ড পুনর্দখল করে। হুইটলকের কথায়– বারাক ওবামা আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধ শেষ হওয়ার একটির ‘বিভ্রম’ তৈরি করেছিলেন।