পুবের কলম প্রতিবেদক: শনিবার বারুইপুরের কমলা ক্লাবে তৃণমূল মাদ্রাসা টিচারর্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে মাদ্রাসা শিক্ষা বিষয়ক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন সংস্থার সভাপতি একেএম ফারহাদ।
বারুইপুরের এই সভায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন মাদ্রাসা থেকে প্রচুর শিক্ষক ও শিক্ষিকা উপস্থিত ছিলেন। একেএম ফারহাদ বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মাদ্রাসার যে নেটওয়ার্ক আছে তাতে প্রত্যেক জেলায় বিভিন্ন স্থানে এই মাদ্রাসাগুলি অবস্থান করছেন এবং পশ্চিমবঙ্গে তার ভূমিকা পালন করেছে। ফারহাদ বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষকদের নিয়ে তৃণমূলের একমাত্র সংগঠন হচ্ছে ‘তৃণমূল মাদ্রাসা টিচারর্স অ্যাসোসিয়েশন’। আর কোনও সংগঠনের প্রতি তৃণমূলের স্বীকৃতি নেই। তিনি আরও বলেন, আমরা তৃণমূলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা দিদির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মাদ্রাসা এবং শিক্ষকদের উন্নতির জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।
এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক এবং প্রাক্তন সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান বলেন, মাদ্রাসাগুলি বাংলায় শিক্ষার প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। হাইমাদ্রাসাএবং সিনিয়র মাদ্রাসাগুলি সেই ব্রিটিশ পিরিয়ড থেকে এক ঐতিহ্যবাহী ভূমিকা পালন করেছে। আলিয়া মাদ্রাসা এবং হুগলি মাদ্রাসা সেই সময় যে উন্নতমানের শিক্ষার নজির রেখেছে এবং এই দুই মাদ্রাসা থেকে বড় বড় ব্যক্তিত্বরা শিক্ষা লাভ করে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দেখতে হবে মাদ্রাসা শিক্ষার সেই মানকে কি করে আরও উন্নত করা যায়। এ বিষয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকারা বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে ইমরান মন্তব্য করেন। ইমরান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অসমের বিজেপি সরকার শতাধিক প্রাচীন মাদ্রাসা গুলিকে বন্ধ করে দিয়েছে। সেখানে বুলডোজারে মাদ্রাসা ধ্বংস করা হয়েছে এবং বহু সংখ্যালঘু মানুষকে জায়গা যেমন বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। ইমরান উল্লেখ করেন, দিন কয়েক আগে কেন্দ্র সরকার এক সার্কুলার জারি করে বলেছে, বিভিন্ন রাজ্যের মাদ্রাসায় যেসমস্ত হিন্দু পড়ুয়ারা অধ্যয়ন করছে, তাদের চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করতে হবে এবং মাদ্রাসা থেকে বের করে নিয়ে স্কুলে পড়াশোনার ব্যবস্থা করতে হবে। পশ্চিমবাংলাতেও বহু হিন্দু ও দলিত পড়ুয়ারা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। কেন্দ্র সরকারের এই ধরনের সিদ্ধান্ত প্রতিবাদ যোগ্য বলে ইমরান মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ মাদ্রাসাতেই প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। ইমরান আরও বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সব ধরনের উন্নতি প্রয়োজন, সেই বিষয়টিও আমাদের দেখতে হবে।
এই সভায় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জনাব মনিরুল মোল্লা, চম্পক নাগ, দিলাওয়ার হোসেন, জনাব কুতুবউদ্দীন ও ফিরোজ জুলফিকার, অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আবু সুফিয়ান পাইত।