পুবের কলম প্রতিবেদক: দুদিনের সফরে সাগরে এসে গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে এদিন গঙ্গাসাগরে দাঁড়িয়ে সাগর মেলাকে কেন্দ্র করে দিল্লির সরকারের বঞ্চনা নিয়ে সড়ক হলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে হেলিপ্যাড তারপর ভারত সেবাশ্রম এবং সবশেষে সাগরের কপিলমুনির আশ্রমে দাঁড়িয়েও মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে সরব হলেন।
প্রসঙ্গত বুধবারই দুদিনের সফরে গঙ্গাসাগরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দুপুর দুটো নাগাদ গঙ্গাসাগরে হেলিকপ্টারের নামার পর প্রথমে সাগরে নবনির্মিত তিনটি হেলিপ্যাডের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকেই ভার্চুয়ালি মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করেন সুন্দরবন বিষয়ক দফতরের ৪০ মিটার দীর্ঘ কাকদ্বীপের কামারহাট সেতু।
রাজ্যের পাঁচটি তীর্থক্ষেত্রকে একত্রিত করে তৈরি ‘বাংলার মন্দিরে’রও সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, কুম্ভ মেলাকে কেন্দ্রীয় সরকার ঢেলে সাহায্য করলেও গঙ্গাসাগরকে দুয়োরানী করে রেখেছে কেন্দ্র। এই মেলা সম্পাদনের জন্য ১০ পয়সার বাতাসা দিয়েও সাহায্য করে না কেন্দ্রীয় সরকার। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মেলা হিসেবে গঙ্গাসাগর অনন্য। এখানে আগত মানুষ অত্যন্ত কষ্ট করে আসনে। কুম্ভমেলার পরিকাঠামো অনেক ভালো। রেল ও বিমানের সঙ্গে এটির যোগাযোগ রয়েছে। গঙ্গাসাগরে তা নেই। এবার এই মেলাকে জাতীয় মেলা হিসেব ঘোষণা হোক বলে দাবি জানিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, এবার জল পেরিয়ে প্রায় কোটির কাছাকাছি মানুষ ভিড় জমাবেন গঙ্গাসাগরে। দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে মানুষ সাগরমুখী হবে। সরকারের ১০ থেকে ১২টি দফতর এখানে হাজির থাকবে। থাকবেন একাধিক দফতরের মন্ত্রীরাও।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, কুম্ভ মেলাকে কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। এই নিয়ে আমি বিরোধিতা করছি না। কিন্তু কেন্দ্রের উচিত গঙ্গাসাগরকেও গুরুত্ব দেওয়া। কুম্ভমেলাতে বহু মানুষ আসেন। কিন্তু সেই মেলার সঙ্গে গঙ্গাসাগর গুলিয়ে ফেলা উচিত নয় বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই মেলাতে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে আর্থিক ভাবে কেন্দ্র। কিন্তু গঙ্গাসাগরের ক্ষেত্রে এক টাকাও কেন্দ্র আমাদের দেয় না বলে অভিযোগ মমতার।
এদিনও মুখ্যমন্ত্রীর গলায় সাগরের সড়ক পথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম সেতু না হওয়া নিয়ে ক্ষোভ শোনা গেল। মমতা বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গডকড়ী প্রতিশ্রুতি দিলেও এই ব্রিজ তৈরির ব্যাপারে কেন্দ্র কোনও সাহায্য করেনি। মুড়িগঙ্গায় সেতুর প্রয়োজন। বারবার কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেও সাড়া মেলেনি। শেষপর্যন্ত আমরা বাধ্য হয়ে চেষ্টা করছি নিজেদের মতো করে করার। ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ। আমরা নিজেদের মতো একটা ডিপিআর তৈরি করেছি। তবে একটু সময় লাগবে। এত বড় যজ্ঞ। তার সামগ্রী জোগাড় করতে সময় লাগবে।