পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: আন্তর্জাতিক মন্দা পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও গত বছর রফতানি আয়ে রেকর্ড গড়েছে তুরস্ক। ২০২২ সালে দেশটির রফতানি বেড়েছে ১২.৯ শতাংশ। আর মোট রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল ২৫৪.২ বিলিয়ন ডলার। যা আগের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। সোমবার এক ভাষণে এই তথ্য জানান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনীতি শক্তিশালী করতে রফতানি আয় বৃদ্ধি ও খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানে জোর দিয়েছে তুরস্ক। গত মাসেই কৃষ্ণসাগরে আরও ৫৮ বিলিয়ন ঘনমিটার প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ আবিষ্কার করে দেশটি।
এরদোগান জানান, মজুদের পরিমাণ বেড়েছে অন্য একটি গ্যাসক্ষেত্রেও। এ নিয়ে কৃষ্ণসাগরে দেশটির মোট প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭১০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার। ভূমধ্যসাগরে প্রাকৃতিক সম্পদের খোঁজে আরও অনুসন্ধান তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে তুরস্ক। তবে বিরোধপূর্ণ পানি সীমায় চালানো তৎপরতা নিয়ে গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে আঙ্কারার উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
এরদোগান বলেন, ২০২২ সালে তুরস্ক থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোতে রফতানির পরিমাণ ১২ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে প্রায় ১০ হাজার কোম্পানি প্রথমবারের মতো বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী রফতানি করেছে। তবে রফতানি আয় বাড়লেও তুরস্কের সামগ্রিক অর্থনীতির চেহারা খুব একটা উজ্জ্বল নয়। তুরস্কের সরকারি পরিসংখ্যান মতে, গত বছর মুদ্রাস্ফীতি শতকরা ৮৪ ভাগের বেশি বেড়েছে। মূলত গত ২ বছর ধরেই তুরস্কের মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ রুটি কিংবা তেলের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দামই বেড়েছে শতকরা অন্তত ৩০০ ভাগ।
অর্থনৈতিক সূচক ২০০২ সালের চেয়েও নিম্নস্তরে নেমে গেছে। কমেছে জিডিপির পরিমাণও। ২০১৩ সালে ৯৫৭ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২২ সালে জিডিপির আকার হয়েছে ৯০০ বিলিয়ন ডলার।
২০১৮ সাল থেকেই ধীরে ধীরে তুরস্কের অর্থনৈতিক সংকট বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। চার বছরের মধ্যেই ওই সংকট নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ যেমন উধাও হয়ে গেছে তেমনি বেকারত্বও বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। যার ফলে তুরস্কের মুদ্রা লিরার মূল্যের ব্যাপক পতন হয়েছে।