পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ নতুন রাজ্যপাল পেতে চলেছে বাংলা। ইতিমধ্যেই তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়ে গিয়েছে। কলকাতার রাজভবনের নতুন বাসিন্দা হচ্ছেন সি ভি আনন্দ বোস। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এবার জানা গেল আগামী বুধবার বাংলার নতুন রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নিতে চলেছেন এই প্রাক্তন আইএএস অফিসার।
মঙ্গলবার রাতেই তিনি কলকাতায় চলে আসছেন। বুধবার রাজভবনে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বর্তমান রাজ্যপাল লা গণেশন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যগণ। উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের বেশ সাংসদ ও বিধায়ক। থাকবেন গুরুত্বপূর্ণ দফতরের সচিবেরাও।
বাংলার নয়া রাজ্যপাল হিসাবে মনোনিত হয়েই রাজ্যের জন্য বার্তা দিয়েছিলেন সি ভি আনন্দ বোস। জানিয়েছিলেন, ‘এটি একটি মহান রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের কাজে লাগতে পারব ভেবে দারুণ লাগছে। আমি রাজ্যপালের পদকে মোটেও বড়সড় কোনও পদ বলে মনে করি না। বরং রাজ্যবাসীর উন্নয়নে যাতে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারি, সেই সুযোগ এটি।’
পাশাপাশি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে জানিয়েছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি একজন শ্রদ্ধেয় ও নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখি। আমার মন খোলা। নিরপেক্ষতা রেখেই ওঁর সঙ্গে কাজ করব। যদি রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী সংবিধানের সীমার মধ্যে থাকেন, তা হলে কোনও সমস্যাই হবে না।
রাজনীতিবিদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই রাজ্যপালের একমাত্র বিবেচনার মানুষ। দুটি সম্পূর্ণ আলাদা সত্ত্বা।’ তৃণমূলের তরফেও রাজ্যপালের এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে বলা হয়েছে, নয়া রাজ্যপাল সংবিধান মেনে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করবেন এমনটাই তাঁরা আশা করেন। যদিও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, নতুন রাজ্যপাল পূর্বতন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের পথ অনুসরণ করবেন এমনটাই তিনি আশা রাখেন।
তবে রাজ্যের পাশাপাশি জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে জোর জল্পনা ছড়িয়েছে বাংলার বুকে নয়া রাজ্যপাল নিয়োগ হওয়ার ঘটনায়। কেন্দ্রের আমলামহলের একাংশের দাবি, নয়া রাজ্যপালকে বাংলায় বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছে। আর সেই দায়িত্ব হল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর যোগাযোগ রক্ষা ও সম্পর্কের উন্নতি এবং কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে রাজ্য সরকারের যথাযথ সমন্বয় সাধন।
জগদীপ ধনখড় যে পথে হাঁটা দিয়েছিলেন সেই পথে নতুন রাজ্যপালকে না হাঁটারই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে। জগদীপ ধনখড়ের ভূমিকায় কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক যেমন খারাপ হয়েছে, দুইয়ের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে, মতবিরোধ বেড়েছে তেমনি রাজ্যপাল পদের সাংবিধানিক গুরুত্ব নিয়েও বিতর্ক বেড়েছে।