পুবের কলম প্রতিবেদক, হাওড়া: জম্মু-কাশ্মীরের রামবান থেকে সোমবার আল-কায়েদা জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার হয় আমির উদ্দিন। তার বাড়ি হাওড়ার সাঁকরাইল ব্লকের মাসিলা পাঠানপাড়ায়। মেধাবী আমির উদ্দিন আল-কায়েদা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত একথা মানতে পারছেন না তার পরিবারের সদস্যরা। এই খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেছে তার পাড়া-প্রতিবেশী এবং আত্মীয়-স্বজনরা। আমিরুদ্দিনের পরিবারের সদস্য এবং গ্রামবাসীদের একাংশ মনে করছেন ফাঁসানো হয়েছে আমিরুদ্দিনকে।
তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ‘স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়ানোর পাশাপাশি দর্জির কাজ করত সে। পরে কাপড় বিক্রি করতে কাশ্মীরে যায়। সেখানে শিক্ষকতার পাশাপাশি কাপড়ও বিক্রি করত। পরে বিয়ে করে সংসার পাতে। ঈদের সময় মাঝে মধ্যে গ্রামের বাড়ি আসত। কাশ্মীর পুলিশের দাবি, জামাকাপড়ের ব্যবসা এবং শিক্ষকতার আড়ালে জঙ্গি সংগঠনের হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজকর্ম করত আমিরউদ্দিন। তাকে গ্রেফতারের পর জেরায় নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
https://www.youtube.com/watch?v=lBhJfo2UpXI
মঙ্গলবার আমির উদ্দিনের দাদা আলমগীর খান করেন, ‘আমার ভাইকে ফাঁসানো হয়েছে। সে কোনও ভাবেই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে না। ঘটনার কথা মঙ্গলবার সকালে আমরা শুনেছি। ভাইয়ের মোবাইল ফোনে ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। কাশ্মীরে তাদের কেউ জানাশোনা নেই, ফলে প্রকৃত সত্য কী সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘আমরা পাঁচ ভাই এবং দুই বোন। আমিরুদ্দিন সবচেয়ে ছোট। সে উত্তরপ্রদেশের একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছে। ছাত্রাবস্থায় অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল। ২০০৭ সাল থেকে সে কাশ্মীরে বসবাস করছে। এখানেও সে শিক্ষকতা করত। পড়ানোর পাশাপাশি জামাকাপড়ের ব্যবসাও করত। সাঁকরাইলের বাড়ি থেকে পাইকারি হারে তার কাছে জামাকাপড় পাঠাত।’ আমির উদ্দিনের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘এত বড় অভিযোগ দিলেই হয় না। তদন্ত করে প্রমাণ করতে হবে। আমার ছেলে এই ধরণের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকতেই পারে না, আমি বিশ্বাস করি না।’ ধৃতের মাসিলা গ্রামের প্রতিবেশীদের মুখেও একই কথা। গ্রামের হাফিজুল মির জানান, ‘এগুলো চক্রান্ত। আমিরুদ্দিন জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে সে কোনও ভাবেই যুক্ত থাকতে পারে না। তাতে ফাঁসানো হয়েছে।’এদিকে , মঙ্গলবার সকালে আমিরুদ্দিনের গ্রেফতারির ঘটনা চাউর হতেই এলাকার বাসিন্দারা ভিড় জমান খান পরিবারের বাড়িতে। থমথমে পাঠানপাড়ার পরিবেশ। চাপা উত্তেজনা সকলের মনে।