পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক : যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পেশ করল বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা ‘হু’। যা ভয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ‘হু’ এর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত দুবছরে যক্ষ্মায় মৃত্যুর হার বেড়েছে ১৪ শতাংশ। এই তালিকায় প্রথম চারটি দেশের মধ্যে রয়েছে ভারত।
‘হু’-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৯ সালে যক্ষ্মায় মৃত্যুর সংখ্যা ১৪ লক্ষ। ২০২০ সালে তা বেড়ে হয় ১৫ লক্ষ। পরের বছর সেই সংখ্যাটা আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে।
এক দশকের বেশি সময় ধরে যক্ষ্মায় আক্রান্তের সংখ্যা নিম্নমুখী থাকার পরে অতিমারির হাত ধরে হঠাৎ করে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। ২০২১ সালে যক্ষ্মায় মৃত্যু হয়েছে ১৬ লক্ষের।
‘হু’ এর বক্তব্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে করোনা অতিমারি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সেই সময় প্রয়োজনীয় পরিষেবা, চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছে রোগীরা।
গোটা দেশের মধ্যে যক্ষ্মায় সব থেকে বেশি মৃত্যুর হার এই চারটি দেশে। এগুলি হল ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মায়ানমার ও ফিলিপিন্স।
সারা বিশ্বের পরিসংখ্যান প্রকাশ করে হু জানাচ্ছে, ২০০৫ থেকে ২০১৯ সালে যক্ষ্মায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছিল। কিন্তু ২০২০ সাল থেকে ফের বাড়ে মৃত্যুর সংখ্যা। ২০২১ সালে সারা দুনিয়ায় যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছেন এক কোটি ৬ লক্ষ। ২০২০ সালের থেকে ৪.৫ শতাংশ বেশি। ২০২০ থেকে ২০২১ সালে প্রতি এক লক্ষ জনে যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে। ৩.৬ শতাংশ বেড়েছে সেই সংখ্যা। আগের দু’দশকে প্রতি বছর এক লক্ষ জনে যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা আগের বছরের থেকে বাড়েনি। কয়েক বছর বেড়েছিল এবং তা আগের বছরের থেকে দুই শতাংশের বেশি নয়।
গোটা দুনিয়ায় যত জন আক্রান্ত হন, তার দুই-তৃতীয়াংশই আটটি দেশের বাসিন্দা। সেই আটটি দেশ হল ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চিন, ফিলিপিন্স, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, বাংলাদেশ, ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো। কিন্তু হঠাৎ করে করোনা অতিমারির কারণে এত দ্রুতগতিতে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা নিয়ে চিন্তিত ‘হু’।
ফুসফুসে যক্ষ্মা হলে হাল্কা জ্বর ও কাশি হতে পারে। কাশির সঙ্গে গলার ভিতর থেকে থুতুতে রক্তও বের হয়। মুখ না ঢেকে কাশলে থুতু বাতাসে ছড়িয়ে যায়। আলো-বাতাসহীন অস্বাস্থ্যকর বদ্ধ পরিবেশে মাইকোব্যাক্টেরিয়াম অনেকক্ষণ বেঁচে থাকে। এই রোগের চিকিৎসা সম্ভব।
হু-র বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, যক্ষ্মা রোগ দ্রুতগতির বৃদ্ধির অন্যতম কারণ যুদ্ধ। সেই সঙ্গে গোটা বিশ্বজুড়ে শক্তি ও খাবারের অভাব। যা ভবিষ্যতে সংকটের কালো মেঘ ঘনিয়ে আনতে পারে।
হু প্রধান টেডরোস আধানোম ঘেব্রিয়িসাস এই অবস্থায় আশা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, করোনা অতিমারি থেকে আমরা অনেক শিক্ষা নিয়েছি। সেই অবস্থাকে কাজে লাগিয়েই আমাদের আসন্ন সংকটের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।