পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ক্রমশই উন্নত হচ্ছে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার। সেই অনুযায়ী প্রশিক্ষিত করে তোলা হচ্ছে নার্সদের। এখনও পর্যন্ত হাসপাতালগুলিতে সমস্ত বিভাগে রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষিত থাকেন নার্সরাই। অস্ত্রোপচারের সময়ও তাদের শল্য চিকিৎসকের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে দেখা যায়। তবে এবার তাদের কাঁধে দেওয়া হচ্ছে আরও বাড়তি দায়িত্ব। তারাও এবার সন্তানের প্রসব করাতে পারবেন। অর্থাৎ যে কাজ এতদিন ধরে একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের হাতেই সীমাবদ্ধ ছিল, এবার থেকে তাদের দেখা যাবে অন্যরূপে।
খুব শীঘ্রই রাজ্যের হাসপাতালে বদলাতে চলেছে প্রথাগত সেই নিয়ম। পৃথিবীর অধিকাংশ আধুনিক দেশের মডেল এবার পশ্চিমবঙ্গেও। একমাত্র প্রেশার, সুগার, হার্ট বা রক্তের অসুখ, ক্যানসার-সহ নানা সমস্যায় প্রসবে জটিলতার আশঙ্কা থাকলে, তখনই সাহায্য নেওয়া হবে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই কার্যক্রম রূপায়ণের কাজ শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ইউনিসেফ-এর সহযোগিতায় এই প্রকল্প বিশেষভাবে রূপায়িত হতে চলেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এই সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নাম ন্যাশনাল মিডওয়াফারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। রাজ্যে তার প্রধান সেন্টার হল নীল রতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল। এই বিশেষ প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে ইতিমধ্যেই নার্সদের প্রশিক্ষিত করে তোলার কাজ শুরু হয়ে গেছে। এই হাসপাতাল থেকে ইতিমধ্যে ১২ জন বি এস সি এবং তদূর্ধ্ব শিক্ষিত নার্সদের পাঠানো হয়েছে দক্ষিণের রাজ্য তেলেঙ্গনায়। সেখানে তাঁরা ছয় মাসের বিশেষ ট্রেনিং দেওয়া হবে।
সেই প্রশিক্ষণ শেষে রাজ্যে ফেরার পরেই তাদের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হবে। এই পর্যায়ের প্রশিক্ষণ দেবেন ইউনিসেফ ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং এই বিষয়ে প্রশিক্ষিতরা। সেই প্রশিক্ষণ পর্ব শেষ হলে ওই ১২ জন নার্স হবেন প্রশিক্ষক। তখন তাঁরাই অন্যদের প্রশিক্ষিত করে তুলবেন। এই বিশেষ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পৃথক মিডওয়াইফারি লেড লেবার রুমও তৈরি করা হয়েছে নীল রতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জটিলতাহীন প্রসবে এটাই বিশ্বের আধুনিক দেশগুলির মডেল। এটি অনুসরণ করলে প্রথমত, জটিলতার প্রসব বা হাই রিস্ক প্রেগনেন্সিতে অনেক বেশি সময় দিতে পারবেন শিক্ষক চিকিৎসকরা। প্রসব করতে গিয়ে মায়েদের মৃত্যুর হার কমবে। কোনও প্রয়োজন ছাড়াই সিজার আটকানো সম্ভব হবে
দ্বিতীয়ত, আটকানো যাবে অপ্রয়োজনীয় সিজার। আর সব থেকে বড় কথা, কর্মী ও চিকিৎসক সঙ্কটে সময়ে সরকারি হাসপাতালে উত্তরোত্তর বাড়তে থাকা প্রসব করানোর চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব হবে।