সাকিল আহমেদ: করোনাকালে সাধারণ মানুষ যখন ভয়ে জবু-থবু, চলছে লকডাউন, তখন একজন নার্স ফ্লোরেন্স নাইটিংগেলে র মত রোগীর সেবায় নিজের জীবন বিপন্ন করে মানবসেবা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, তাঁকে দেওয়া হল এবছরের সাহিত্য আকাদেমি যুবা পুরস্কার।
কেন তাঁকে এই পুরস্কার? কি ছিল তাঁর ক্যারিশমা, জাতীয় পুরস্কার জুটল তাঁর কপালে?
নাসরিন নাজমা। মুর্শিদাবাদের ভূমিকন্যা।
তখন চলছে করোনা। পেটে তাঁর আত্মজ সন্তান। সেই সন্তানকে সাক্ষ্য রেখে এবং নিজের ও আত্মজ সন্তানের কথা না ভেবে করোনা রোগীদের নিত্য সেবা দিয়ে গেছেন নাসরিন নাজমা। হতে পারত জীবন বিপন্ন। কিন্তু সেই জীবনকে তুচ্ছ করে অ্যাপ্রন ও পিপিই পরে সেবা প্রদান করেছেন মৃত্যু পথযাত্রী মানুষের। এক দিকে চলছে মৃত্যুর মিছিল। সেই বিপন্ন সময়কে নিজস্ব জার্নালে ভরে ছিলেন। সেই জার্নালের নাম ‘কথা হারানোর জার্নাল’। এবছর সেই বই পেল রাষ্ট্রীয় পুরস্কার।
বছর চৌত্রিশের নাসরিন নাজমার জন্ম মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা থানার বালুটুঙ্গি গ্রামে। উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা গ্রামের স্কুলে। তারপর কলকাতার আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে নার্সিংয়ে ডিগ্রি। পেশায় নার্স। বর্তমানে তিনি বারাসাত জেলা নার্সিং ট্রেনিং কলেজে কর্মরত। গর্ভজাত সন্তানের বয়স এখন দু-বছরের একটু বেশি।
ছোটবেলা থেকেই গান এবং আবৃত্তি চর্চা করেন। কবিতার সঙ্গে সখ্যতা থেকেই কবিতা লেখার শুরু। বাঁকুড়া থেকে প্রকাশিত ভিশ পত্রিকায় ২০১৬ তে প্রথম প্রকাশ।
এছাড়াও নিয়ন, শক্তি সুনীল, ইছেকুঁড়ি, এখন রোদ্দুর, যুগসাগ্নিক সহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর কবিতা। প্রকাশিত কাব্য সংকলন: গোধূলির গ্রামোফোন, প্রকাশনা:বৈতরণী প্রকাশন।
করোনাকালীন প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার গদ্য সংকলন ‘কথা হারানোর জার্নাল’ প্রকাশিত হওয়ায় সব চেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন নাসরিনের পরিবারের লোকজন এবং প্রিয় সহকর্মী নার্স ও চিকিৎসকরা।