শুভজিৎ দেবনাথ,বানারহাট: জলপাইগুড়ি জেলায় ছড়িয়ে ছটিয়ে রয়েছে অসংখ্য নদী। এই নদীগুলি একদিকে যেমন মানুষের জন্য উপকারী,তেমনি কোনো কোনো সময় এই নদীই হয়ে ওঠে আগ্রাসী। বিপন্ন হয় জনজীবন। যেমনটা হয়েছে জলপাইগুড়ির বানারহাট ব্লকের সাকোয়াঝোড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নেপালী বস্তির।
ঘুম কেড়েছে আংড়াভাসা। সারাবছর শান্ত থাকা এই নদী পাহাড়-সমতলে ভারী বৃষ্টি হলেই ফুলেফেঁপে ওঠে তার রুদ্র রূপ ধারণ করে। আর জল নেমে যাওয়ার পর শুরু হয় ভাঙ্গন। নদীর ভাঙ্গনে বিপন্ন হতে বসেছে গ্রাম।
উল্লেখ্য,গত বছর থেকে এ পর্যন্ত নেপালি বস্তি এলাকায় চারটি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। বিঘা কে বিঘা জমি গ্রাস করে ফেলেছে এই নদী। ঘরবাড়ি হারিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে অনেকেই। এইবছরও একটি বাড়ি ভাঙ্গনের গ্রাসে গিয়েছে। বাড়িছাড়া হয়ে বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছেন গোয়ালঘরে।
প্রতিবছর বর্ষায় একটু একটু করে পার ভাঙতে ভাঙতে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে এই নদী। একে তো হাতির আতঙ্ক অন্যদিকে, ভিটে মাটি রক্ষা করার চ্যালেঞ্জ। কৃষি জমি নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় জীবিকায় পড়েছে টান।
স্থানীয় বাসিন্দা মায়া থাপা ও মনমায়া কুমালের অভিযোগ, ওই এলাকায় ৭৫ টি পরিবারের বাস এরপরেও নদী বাঁধ নির্মাণের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি প্রশাসন।এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান কেউ এবছর একবারও খোঁজ নিতে আসেনি। প্রতিবছর শুধু মেলে আশ্বাস কাজের কাজ কিছুই হয় না। চোখের সামনে নদী গর্ভে চলে যেতে দেখতে হয় বাড়িঘর। গ্রামবাসীরা চাইছেন প্রশাসন উদ্যোগ নিক এবং এই নেপালি বস্তি কে বাঁচাতে আংরাভাষা নদীতে বাঁধ নির্মাণ করুক। নয়তো আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই নেপালি বস্তির আর কোন অস্তিত্ব থাকবে না।
সাঁকোয়াঝোরা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিনোদ ওরাও জানান, এতবড় নদীতে বাঁধ নির্মাণ করার মতন অর্থ আমাদের কাছে নেই। আমরা বিষয়টি সেচ দফতরের আধিকারিকদের জানিয়েছি। যদিও বানারহাট সেচ দফতরের এস ডি ও সুব্রত শুর জানান, ওই এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।