পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: প্রথমে করোনা, তার পরে ওমিক্রন এবার নাইরোবি ফ্লাই-এর আতঙ্কে কাঁপছে পাহাড়। ইতিমধ্যেই এই মাছির কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন দার্জিলিং ও কার্শিয়াংয়ের বেশ কিছু মানুষ। সিকিমে আক্রান্ত হয়েছে ১০০ জন ছাত্র। এবার এই আতঙ্ক পাহাড় পার হয়ে এই আতঙ্ক পৌঁছে গেল বাংলায়।
তবে চিকিৎসকদের এই মাছির আক্রমণে প্রথমে একটা কালো দাগ পড়ে যায়। পরে সেই দাগ আসতে আসতে ফিকে হয়ে যায়। তবে জ্বালা, জ্বলুনিভাব থাকে। চিকিৎসায় উপশম সম্ভব। সব থেকে ভালো কাজ দেবে স্টেরয়েড।
চোখকে অবশ্যই পোকার হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কারণ চোখে নাইরোবি ফ্লাই বা অ্যাসিড পোকা আক্রমণ করলে, দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হতে পারে। চিকিৎসকেরা সংক্রমণ রুখতে ফুলহাতা জামা, মশারি ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, পোকা যখন প্রথমে শরীরে আক্রমণ করে যখন যে জায়গাটিতে কামড়ায় সেখানে বিষ নিঃসরণ করে। পোকার কামড়ে ক্যান্থারাইডিন বের হয়, সেখান থেকে চামড়ায় সংক্রমণ হয়। চামড়ার অনেকটা জায়গায় ফোস্কা পড়ে যায়। বিষের ডোজ বেশি হলে কোনও কোনও ক্ষেত্রের কিডনি বিকলও হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা যায়।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই পোকার কামড়ালে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। পোকার হাত থেকে বাঁচতে আলোর নীচে বসা যাবে না। রাতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে। পরতে হবে ফুলহাতা জামা। নাইরোবি ফ্লাই গায়ে বসলে তাকে উড়িয়ে দিতে হবে। মাছিটিকে গায়ের সঙ্গে পিষে ফেলা যাবে না। সেই সঙ্গে আক্রান্ত স্থানটি সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে ফেলতে হবে। দেরি না করে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সংক্রমণ বেড়ে গেলে সেটি সারাতে সময় লাগবে।
পাহাড়ের মানুষের ঘুম কেড়েছে নাইরোবি ফ্লাই বা অ্যাসিড পোকা। এই পোকার আক্রমণে অসুস্থ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক পড়ুয়া থেকে গবেষক। ১২ জুলাই থেকে শুরু হবে স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষা। তার আগে ওই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে ক্যাম্পাসজুড়েই।
ছাত্র-ছাত্রীরা জানিয়েছেন, গত দু’সপ্তাহ ধরেই পোকার আক্রমণ বেড়েছে এবং সন্ধ্যার পরেই পোকার আক্রমণ বেশি হচ্ছে। ছাত্রদের বক্তব্য, কোথা থেকে এই পোকাগুলো আসছে বুঝতে পারছি না। তবে কামড়ানোর সঙ্গে খুব জ্বালা করছে, আক্রান্ত জায়গায় ফোসকা পড়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে জ্বর আসছে। আতঙ্কে বহু ছাত্রই হস্টেল ছেড়েছে।
মূলত, নাইরোবি ফ্লাই বা অ্যাসিড ফ্লাই ভিনদেশী একটি পতঙ্গ। যা কমলা, লাল এবং কালো রঙের ডোরাকাটা হয়। এর লালা বা শরীরে পেডিটিন নামক একটি অ্যাসিড থাকে। বৃষ্টিপ্রবণ এলাকায় ওই পতঙ্গর বসবাস হয়ে থাকে। কয়েক দশক যাবৎ এদেশে পতঙ্গের দেখা মিলছে। তবে উত্তরে বিশেষত হিমালয় পাদদেশে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ায় সেখানে এই পতঙ্গ বেশি দেখা যায়।