পুবের কলম প্রতিবেদক: বিরোধী শিবিরে থাকা বেশ কয়েকটি দল আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে পিছু হঠে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার উপরে মহারাষ্ট্রের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সমীকরণ অনেকটাই বদলেছে। আর সেই কারণে রাষ্ট্রপতি পদের ভোটে বিজেপি প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর জয়ের সম্ভাবনা যে বেশি শুক্রবার তা মেনে নিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও বিরোধী শিবিরের সম্মিলিত প্রার্থী যশবন্ত সিনহার পাশে থাকার সিদ্ধান্তে এখনও অটল রয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘বিজেপি যদি আগে জানাত দ্রৌপদী মুর্মুকে প্রার্থী করবে, তাহলে ভেবে দেখতাম। ১৭-১৮টা দল বসে যশবন্ত সিনহাকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন যদি অন্য কিছু ভাবতে হয়, সেটা একসঙ্গে বসেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে ছন্নছাড়া বিরোধী শিবিরকে ঐক্যবদ্ধ করতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকেই হাতিয়ার করতে চেয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্মিলিতভাবে প্রার্থী দিয়ে গোটা দেশের কাছেই বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ চেহারা তুলে ধরার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। এমনকী যোগ্য প্রার্থীর খোঁজ করতে গিয়ে যখন বিরোধী শিবিরের নেতারা নাকানিচোবানি খাচ্ছিলেন তখনই নিজের দলের সহ সভাপতি তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহার নাম প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পাল্টাচ্ছে সমস্ত রাজনৈতিক সমীকরণ। আদিবাসী তাস খেলে বিরোধী শিবির থেকে কয়েক কদম এগিয়ে গিয়েছে পদ্ম শিবির। এদিন তা মেনেও নিয়েছেন দেশে বিজেপি বিরোধী শিবিরের মধ্যমণি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন কলকাতায় ইসকন আয়োজিত রথযাত্রার সূচনার পরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মমতা বলেন, ‘দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আমি সব সময় ঐক্যমতের পক্ষে। এর আগেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ঐক্যমতের ভিত্তিতে এপিজে আব্দুল কালাম প্রার্থী হয়েছিলেন। এবারও যদি বিজেপি আগে থেকে জানাত একজন আদিবাসী মহিলাকে প্রার্থী করতে চলেছে, তাহলে সবাই বসে একসঙ্গে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। ঐক্যমতের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি বাছাই করা হলে, তা দেশের পক্ষে মঙ্গলের হত। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বের পক্ষ থেকে ফোন করে কোনও নাম জানানো হয়নি। শুধু আমাদের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল।’
আদিবাসী এবং মহিলাদের প্রতি তাঁর যে বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে তা জানিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বময় নেত্রী বলেন, ‘আদিবাসীদের প্রতি আমাদের সেন্টিমেন্ট রয়েছে। আমি আদিবাসী, দলিতদের সমর্থন করি। মহিলা প্রার্থী হলে আমি সবসময়ে রাজি।’ তাহলে কী যশবন্ত সিনহা প্রার্থী হিসেবে সরে দাঁড়াবেন?
এ বিষয়ে এই মুহূর্তে কিছু স্পষ্ট করে বলতে রাজি হননি তৃণমূল নেত্রী। মমতার বক্তব্য, ’১৭-১৮টি দল একসঙ্গে বসে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মনোনয়নও জমা হয়ে গিয়েছে। তাই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সব বিরোধী দল একসঙ্গে বসেই সিদ্ধান্ত নেবে। আমার পক্ষে একা ফিরে আসা সম্ভব নয়। তবে আমি চাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে, নির্বিঘ্নে মিটুক। দেশের উন্নতি হোক।’