আবদুল ওদুদঃ রাজ্য থেকে হজযাত্রীদের নিয়ে শেষ উড়ান পবিত্রভূমি মক্কায় পৌঁছল। গত ২ সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা হজযাত্রার কার্যক্রম শেষ হল। শুক্রবার শেষ উড়ানটিতে ৩৭৭ জন হজযাত্রী ছিলেন। যদিও ৪৫ হজযাত্রী এখনও রয়েছে। তাঁরা আজ শনিবার আহমদাবাদ থেকে মক্কার বিমান ধরবেন। এর মধ্যে কয়েকজন খাদেমুল হুজ্জাজও রয়েছেন।
এ দিন বিহারের ৭ জন, পূর্ব বর্ধমানের ১২ জন, কোচবিহারের ৮২ জন, দক্ষিণ দিনাজপুরের ১১ জন, দার্জিলিং ২ জন, জলপাইগুড়ির ৩২ জন, কলকাতার ৩২ জন, মালদার ২ জন, মুর্শিদাবাদের ৭ জন, উত্তর ২৪ পরগনার ১৯ জন, উত্তর দিনাজ পুরের ১৭৯ জন, আলিপুর দুয়ারের ২ জন, পশ্চিম বর্ধমান ৪ জন এবং কালিম্পংয়ের ৫ জন হজযাত্রী হজ করতে রওনা দেন। রাজ্য হজ কমিটির আধিকারিক মুহাম্মদ নকি বলেন, গত ১৭ জুন শুরু হয়েছিল হজযাত্রার কার্যক্রম।
শুক্রবার সেই কার্যক্রম শেষ হয়। হজ সম্পন্ন করে আগামী ২৭ জুলাই হাজীরা ফিরতে শুরু করবেন। ২৭ জুলাই মদিনা থেকে রওনা দিয়ে হাজীরা ২৮ জুলাই ভোর ৪.৪০ মিনিটে কলকাতা বিমান বন্দরে পৌঁছবেন। তবে সময়ের যদি পরিবর্তন হয়, সেক্ষেত্রে দেরি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় হজ কমিটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ভোর ৪.৪০ মিনিটে কলকাতায় পৌঁছবেন হাজীরা।
এ বছরও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হজযাত্রীদের বিমানবন্দরে শুভেচ্ছা জানাতে যান রাজ্যের মন্ত্রীরা। প্রথম দিন ছিলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এ ছাড়াও ছিলেন সাংসদ নাদিমুল হক, কেন্দ্রীয় হজ কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মাফুজা খাতুন, সাবেক সাংসদ তথা ‘পুবের কলম’ পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান।
এ ছাড়াও রাজ্য সংখ্যালঘু দফতরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। এর পরই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, প্রতিদিনই কোনও একজন মন্ত্রী বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে হজযাত্রীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ফেরার সময়ও রাজ্যের মন্ত্রীরা বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকবেন। রাজ্য হজ কমিটির চেয়ারম্যান সাংসদ নাদিমুল হক বলেন, এ বছর রাজ্য থেকে হজযাত্রার কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও হজযাত্রার উড়ান সম্পর্কে খোঁজ খবর রেখেছিলেন। সুষ্ঠুভাবে হজ পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রত্যেককে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি এই কাজে নিযুক্ত থেকে সুষ্ঠুভাবে কাজ পরিচালনা করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এদিন বিমানবন্দরে হজযাত্রীদের শুভেচ্ছা জানাতে যান সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতরের মন্ত্রী গোলাম রব্বানী। বিমানবন্দরে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় হাজি রহিম বস্ক ওয়াকফ এস্টেট কমিটির পক্ষ থেকে স্মারক দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তুলে দেন কমিটির সম্পাদক কুতুবউদ্দিন তরফদার। ছিলেন, সাংসদ নাদিমুল হক, সংখ্যালঘু দফতরের সচিব গুলাম আলি আনসারি, আলিয়ার ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আবু তাহের কমরুদ্দিন, মন্ত্রী আখরুজ্জামান, কার্য নিবার্হী আধিকারিক মুহাম্মদ নকি প্রমুখ।
উত্তর ২৪ পরগনা বনও ভূমি কর্মাধক্ষ তথা হজ সেবক এ কে এম ফারহাদ বলেন, গত ২ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই বিমানবন্দর এবং মদিনাতুল হুজ্জাজ থেকে হজযাত্রীদের সেবা করে গিয়েছেন। রাজ্য সরকার এবং রাজ্য হজ কমিটির উদ্যোগে যাবতীয় কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। উল্লেখ্য, এ বছর পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও আরও ছ’টি রাজ্যের হাজীরা কলকাতা থেকে হজযাত্রা সম্পন্ন করতে যান। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ছিলেন ৫২১৪ জন, তার মধ্যে পুরুষ হজযাত্রী ৩২৭২ জন এবং মহিলা হজযাত্রী ১৯৪২ জন। ত্রিপুরা থেকে ১০০ জন, বিহার থেকে ১৯০০ জন, ওড়িশা থেকে ৩৮২ জন, ঝাড়’ণ্ড থেকে ১৪৩৩ এবং মণিপুর থেকে ২৯৫ জন। অসম থেকে ৮৭ জন হজযাত্রী গিয়েছেন।