পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ১৭৭ Rank করে ইউপিএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে নজির গড়লেন শিবাঙ্গী গোয়েল। জীবন যুদ্ধে প্রবল লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে ইউপিএসসি পরীক্ষায় এই সাফল্য অর্জন করেছেন শিবাঙ্গী। হাপুরের পিলখুয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা শিবাঙ্গী গোয়েল শুধু তার পরিবারের নয়, সমগ্র জেলার নাম উজ্জ্বল করেছেন। কিন্তু এই সাফল্য সহজে আসেনি। বিয়ের পর পারিবারিক জীবনে তাকে প্রচুর মানসিক, শারীরিক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে।
স্বামীর সংসারে সুখী ছিলেন না শিবাঙ্গী। মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি এক সময়ে বাবার কাছে চলে আসেন। বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন তিনি। বর্তমানে স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে শিবাঙ্গীর।
শিবাঙ্গী জানিয়েছেন আমি সকল বিবাহিত মেয়েদের উদ্দেশেই বলতে চাই, যদি কোনও মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতনের শিকার হন, তাহলে ভয় জীবনে পিছিয়ে আসার কোনও প্রয়োজন নেই। সমাজকে দেখিয়ে দাও, তুমি তোমার নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম। একজন মেয়ে যদি চায়, তাহলে সে সব কিছু করতে পারে। যদি তুমি পড়াশোনা কর, পরিশ্রম করো, তাহলে কেউ তোমাকে আটকাতে পারবে না। তুমিও পারবে একজন আইএএস হতে।
শিবাঙ্গী জানিয়েছেন, বিয়ের আগে থেকেই তার আইএএস হওয়ার স্বপ্ন ছিল। এর আগেও দুবার পরীক্ষা দিয়েছিলাম। কিন্তু অকৃতকার্য হই। তারপর বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তার ওপর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা শারীরিক-মানসিক নির্যাতন শুরু করে। একটা সময়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসেন তিনি। সেই সময় তিনি এক সন্তানের মা।
শিবাঙ্গী জানান, বাড়ি আসার পর বাবা জিজ্ঞাসা করেন, এখন আমি কি করতে চাই? আমি তখনই ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসার সিদ্ধান্ত নিই। শিবাঙ্গীর কথায়, সহজ ছিল না। তবে কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠার জন্য আজ এই জায়গায় পৌঁছনো সম্ভব হয়েছে। তিনি যখন স্কুলে ছিলেন তখন তার প্রিন্সিপ্যাল তাঁকে বলেছিলেন ইউপিএসসির জন্য প্রস্তুতি নিতে। তখন থেকেই স্বপ্ন দেখা শুরু।
শিবাঙ্গীর বাবা রাজেশ গোয়েল একজন ব্যবসায়ী ও মা একজন গৃহবধূ। শিবাঙ্গী তার এই ইউপিএসি পরীক্ষার সমস্ত কৃতিত্ব নিজের পরিবার ও তার একমাত্র কন্যার নামে উৎসর্গ করেছেন। শিবাঙ্গী আরও জানিয়েছেন, তার এই জীবনযুদ্ধ সবটাই তার একমাত্র মেয়ের মুখে দিকে চেয়ে।