পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ ইউক্রেন যুদ্ধে যেন সব দোষ রাশিয়ার! আর ইউক্রেনের প্রতি সবাই মানবিক। রাশিয়ার বিরোধিতা করছেন সকলে, মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুদ্ধাপরাধ তদন্তের তোড়জোড় চলছে। অথচ পশ্চিমা দেশগুলিই এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করছে। ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলে দিচ্ছে তারা, এ দিকে মুসলিমরা বঞ্চিত। এ বিষয়টি খুব ভালো চোখে দেখছে না মুসলিম বিশ্ব। কারণ এই যুদ্ধে রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেন আক্রান্ত হলেই শুধু মানবিকতার উদয় ঘটছে। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনিদের ইসরাইলি সেনা হত্যা করলেও কেউ কোনও উচ্চবাচ্য করছে না। আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়ার ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। তখন শুধু পশ্চিমারা অস্ত্র বেচতেই তৎপর হয়ে ওঠে। এ বিষয়ে ফিলিস্তিনি সমাজকর্মী বাসেল আল আদ্রা বলেন, নির্যাতিত-নিপীড়িত পক্ষ যখন ফিলিস্তিন হয়, তখন বিশ্ব পাত্তাই দেয় না। উলটো ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতেই থাকে। নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বাসেল বলেন, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১-এর বিকেলে মুখোশধারী ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের একটি দল তাড়া করছিল। তারা বর্ণবাদী স্লোগান দিচ্ছিল। তারা ফিলিস্তিনি বাসিrদাদের বাড়িতে আক্রমণ করে, পাথর দিয়ে জানালা ভেঙে দেয় এবং গাড়ির টায়ার কেটে দেয়। দিনটিকে নিজের জীবনের সবচেয়ে ভয়ানক দিন আখ্যা দিয়ে বাসেল বলেন, ‘কমপক্ষে ১৫ জন বসতি স্থাপনকারী আমাকে ধাওয়া দেয়। তারা আমাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু আমার ভাগ্য ভালো, তাদেরকে পেছনে ফেলতে সক্ষম হয়েছিলাম।’ সে হামলায় তিন বছর বয়সি মুহাম্মদ হামামদাহ-সহ তিনজন নিহত হয়। মাথায় পাথরের আঘাত লেগে হামামদাহর মাথার খুলি ভেঙে যায় এবং মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। চারদিনের জন্য তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। বাসেল বলেন, মানবাধিকার সংস্থাগুলো এমন অনেক ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যেখানে দখলদাররা ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন চালানোর সময় ইসরাইলি বাহিনী পাশে দাঁড়িয়ে থেকেছে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের পক্ষ নিয়ে গুলি করে ফিলিস্তিনিদের মেরেছে। ফিলিস্তিনিদের অপরাধ ছিল, নিজেদের সম্পদ রক্ষার চেষ্টা করা। বাসেল উল্লেখ করেন, ইসরাইলের অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা কেবল সামরিক সুরক্ষার দ্বারাই উৎসাহিত হয়নি। ইসরাইলের বসতি দখলদারপন্থী সরকার কর্তৃক অব্যাহতভাবে অর্থনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন পেয়ে আসছে তারা। বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতার বিরুদ্ধে ইসরাইলি পুলিশ স্টেশনে যে অভিযোগ দায়ের হয় তার ৮১ শতাংশেরও বেশির তদন্ত হয় না।