মাওলানা আবদুল মান্নান: আজ লাইলাতুল কদরের রাত। সমগ্র মুসলমি জাহান এই রাতটির জন্য অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন। নবী করিম সা. বলেছেনঃ ‘লাইলাতুল কদরকে রমযানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে অন্বেষণ করো।’ (বুখারী)। অধিকাংশ আলেমদের মতে, ২৭ রমযানের রাতে এর সম্ভাবনা বেশি। হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন, (গাণিতিক হিসেবে) লাইলাতুল কদর রমযানের ২৭ তারিখে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। (তফিসের রসূল বয়ান)
হযরত আয়েশা রা. বলেনঃ ‘নবী করীম সা. রমযানের শেষ ১০ দিন রাতের ইবাদাত করার জন্য নিজে কোমর বাঁধতেন এবং পরিবারের সকলকে ওই রাতগুলোতে জেগে ইবাদাত করার জন্য উৎসাহিত করতেন।’অন্য একটি হাদিসে তিনি বলেন, নবী করীম সা. রমযানের শেষ ১০ দিন ইবাদাতে কঠোর মেহনত করতেন। কদরের এক অর্থ মাহাত্ম্য, মর্যাদা ও সম্মান। আর এই সম্মানিত রাতে ‘কুরআন’ নাযিল হওয়ায় এই রাত এক বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদা বহন করছে। এই রাতের ইবাদাত এক হাজার মাসের ইবাদাতের চেয়েও উত্তম।
এক হাজার মাস প্রায় ৮৩ বছর ৪ মাসে হয়। সাধারণত একটি মানুষের গড়ে বেঁচে থাকার চেয়েও বেশি সময় হচ্ছে। তাই মানুষ যদি এই রাতটি ইবাদাতে কাটিয়ে দিতে পারে, তাহলে সারাজীবনের ইবাদাতের চেয়েও বেশি সওয়াব বা পুণ্য অর্জন করা যাবে।কদরের আর এক অর্থ তাকদির (ভাগ্য)। এই রাতে পরবর্তী এক বছরের নির্ধারিত লিপি ব্যবস্থাপক ও ফেরেশ্তাগণের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এতে প্রত্যেক মানুষের জীবন, মৃত্যু ও রিযক ইত্যাদির বিবরণ থাকে। আর অনুতপ্ত হৃদয়ের দোয়া ভাগ্যের লিখনকে খণ্ডন করতে সাহায্য করে। (আল হাদিস)
সূরা কদরে মহান আল্লাহ্ বলেছেন, জিবরাঈল আ. অসংখ্য ফেরেশ্তাগণ সহ প্রত্যেক বস্তুকে নিয়ে ধরাপৃষ্ঠে অবতরণ করেন।শান্তিময় ও এই রাত ফযরের উদয় পর্যন্ত থাকে। ফেরেশ্তাগণ দুনিয়াবাসীর প্রতি রহমত ও কল্যাণ বর্ষণ করতে থাকে এবং এ রাতে ইবাদাতে লিপ্ত থাকা বান্দাহ্দের জাহান্নাম থেকে নাজাতের সুসংবাদ শোনান। ক্বদর রাতের দোয়া ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বাল আফউয়া-ফাআফু আন্নী ইয়া কারীম।’ এই দোয়া প্রিয় নবী করীম সা. হযরত আয়েশা রা.-কে কদরের রাতে পাঠ করতে বলেছেন।