পুবের কলম প্রতিবেদক: বাঙালি খ্রিস্টানদের সম্পর্কে এ রাজ্যের বৃহৎ সংখ্যক মানুষজন খুব বেশি ওয়াকিফহাল নয়। তবুও তাঁরা নিজেদের মতো করেই ধর্মাচরণ করছেন এবং বৃহত্তর বাঙালি সমাজের সঙ্গে মিশে আছেন। সেই অন্যতম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুখে-দুখে, সমস্যা-সম্ভাবনায় পাশে রয়েছে বাঙালি খ্রিস্টানদের নিজস্ব সংগঠন বঙ্গীয় খ্রিস্টিয় পরিষেবা। সেই সংগঠনের সভাপতি হেরদ মল্লিক সামাজিক কাছে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকেন।
তাঁকেই আবার দেখা যায় সম্প্রীতির মঞ্চে, সর্বধর্ম সমন্বয়ের আলোচনাসভায়। সেই খ্রিস্টান নেতার কাছে জানতে চাওয়া হয়, মুসলিমদের রোযা এবং রমযান মাস নিয়ে নিজস্ব মতামত। হেরদ মল্লিক বলেন, রমযান মাস ইসলাম অনুসারীদের কাছে একটি পবিত্র মাস। কারণ এই মাসেই পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন শরীফ নাজিল হয়েছিল। এই পবিত্র মাসজুড়ে ইসলাম অনুসারীরা উপবাস করে সৃষ্টিকর্তার শরণাপন্ন হয়ে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে তুলতে চান। যদিও, এইভাবে দীর্ঘদিনের উপবাসের রীতি খ্রিস্টান সমাজেও রয়েছে।
গুড ফ্রাইডের ৪০ দিন আগে থেকে এই উপবাস এবং ঈশ্বরের শরণাপন্ন হওয়ার নিয়ম রয়েছে। এই সময়ে আত্ম চেতনার পরিশুদ্ধিকরণ, নিজের পাপবোধ নিয়ে অনুশোচনা, অন্যায় কাজ থেকে ফিরে আসার মতো বিভিন্ন আধ্যাত্মিক গুরুত্ব রয়েছে। সংসার জীবনে ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় আমরা অনেক পাপ কাজ করে ফেলি। অনেক মানুষকে কটূ কথা বলে ফেলি। অনেকেরই ক্ষতিসাধন করে ফেলি নিজের অজান্তে। সেই সব পাপ কাজ থেকে মুক্তি লাভের সুযোগ এনে দেয় এই ধরনের দীর্ঘ উপবাস ও ঈশ্বরের নিকট আত্মসমর্পণের দ্বারা।
আমার ধারণা, শুধু আমাদের খ্রিস্ট ধর্ম কিংবা ইসলামে নয়, সব ধর্মেই নিজেকে শুধরে নেওয়ার সুযোগ আছে। কেউ পালন করে কেউ করে না। তবে রমযান মাসের দীর্ঘ সময়ের উপবাস ও কৃচ্ছসাধন আসলে নতুন করে জীবনকে ব্রেক দেওয়া। নতুন পথে চলার শপথ। একটা সুন্দর জীবনের জন্য রোযা অত্যন্ত জরুরি। আমাদের ভুল কাজের জন্য ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চেয়ে পরিশুদ্ধ করার সুযোগ। তবে একমাস ধরে এই যে ধর্মের পথ থেকে নিজেকে বদলানোর অভ্যাস গড়ে তোলা, তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন সারা বছর ধরে।