পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বেসামরিক ব্যক্তিরা। তুর্কি বংশোদ্ভূত মেসখেতিয়ান মুসলিম সম্প্রদায়ও এ যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হন। এসব মেসখেতিয়ান মুসলিমদের উদ্ধার করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে তুরস্ক। শনিবার এমনই সংবাদ প্রকাশ করেছে ডেইলি সাবাহ।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তুর্কি বংশোদ্ভূত মেসখেতিয়ান মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকদের ইউক্রেন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এসব মেসখেতিয়ান মুসলিমদের স্থলপথে তুরস্কে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইউক্রেনের মাইকোলাইভ শহর থেকে ৯০ জন মেসখেতিয়ান মুসলিমকে বাসে করে নিরাপদে তুরস্কে নিয়ে আসা হয়। ইউক্রেনের ওই মাইকোলাইভ শহরে এখন ভয়ঙ্কর সঙ্ঘাত চলছে। তুরস্ক কর্তৃক উদ্ধারকৃত এসব মানুষদের অধিকাংশই ছিল নারী ও শিশু। পরে শরণার্থীদের নিয়ে আসা বাস হামজাবেলি বর্ডার গেট দিয়ে তারা তুরস্কে প্রবেশ করে। এ হামজাবেলি বর্ডার গেটটি তুরস্কের বুলগেরিয়া সীমান্তে অবস্থিত। পরে মেসখেতিয়ান মুসলিমদের নিয়ে আসা বাসগুলোকে স্বাগত জানান তুরস্কের শরণার্থী বিভাগের কর্মকর্তারা।
যুদ্ধকবলিত অঞ্চল থেকে ছোট শিশুদের সাথে নিয়ে আসা মেসখেতিয়ান মুসলিম নারীরা নিরাপদে তুরস্কে আসতে পেরে খুশি। কিন্তু, অনেকে স্বামী ও স্বজনদের ফেলে আসার কারণে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। নিজের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার বিষয়ে জুলেহা ইজাতোভা নামের এক নারী আনাদোলু এজেন্সিকে জানান, ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গোলাবর্ষণের কারণে সেখানে বাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
জুলেহা ইজাতোভা বলেন, আমরা ওই এলাকা থেকে বের হয়ে যেতে পারলেও আমার তিন সন্তান সেখানে আটকা পড়েছে। তাদের বয়স যথাক্রমে ২২,২৬ ও ২৭ বছর। আমার স্বামীও সেখানে আটকা পড়েছেন। আমরা নিজেদের বাঁচিয়ে নিতে পারলেও আমাদের মন ও হৃদয় ওই ইউক্রেনেই আছে। তিনি বলেন, ইউক্রেনের সব স্থানে এখন যুদ্ধ চলছে। রাশিয়ান যোদ্ধারা তাদের ট্যাঙ্ক ও কামান সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন এবং সর্বত্র গোলাবর্ষণ করছেন।
উল্লেখ্য, মেসখেতিয়ান তুর্কিরা, সুন্নি হানাফি গোষ্ঠী । তাঁরা তুরস্কের সীমান্ত বরাবর জর্জিয়ার মেসখেতি অঞ্চলের প্রাক্তন অধিবাসী। ১৯৪৪ সালের ১৫-২৫ নভেম্বর জোসেফ স্ট্যালিন তাদের মধ্য এশিয়ায় নির্বাসিত করেন এবং তাঁরা কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান এবং উজবেকিস্তানে মধ্যে বসবাস শুরু করেন।