দেবশ্রী মজুমদার, নলহাটি: স্ত্রী’কে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বারণ করেছিলেন স্বামী। তার খেসারত দিতে হল পরীক্ষার্থী স্ত্রীকে। পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময়, কথা না শোনার শাস্তি হিসেবে অবাধ্য স্ত্রীয়ের মুখে অ্যাসিড ঢেলে শাস্তি দিল স্বামী। এই মুহূর্তে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী স্ত্রী। মুখ থেকেই বুক পর্যন্ত অংশ পুড়ে গেছে। শেষ পরীক্ষা দেওয়া হল না।
অভিযুক্ত স্বামী পলাতক। বীরভূমের নলহাটি থানার অন্তর্গত আটগ্রামের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সন্দেহের বশবর্তী এই ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, আট গ্রামে হিরামণির সঙ্গে বিয়ে হয় রাজেশ সেখের। হিরামণি বাপের বাড়ি একই থানার গোপালপুরে। দেখাশোনা করে বছর তিনেক আগে তাদের বিয়ে হয়। ছ’ মাসের একটি সন্তান আছে তাদের। পরীক্ষার্থীর বাবা রুহুল আমিনের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তার মেয়েকে সন্দেহ করত জামাই রাজেশ। এই নিয়ে প্রায় অশান্তি করত। মুম্বই থেকে ভাই ফোন করলে সন্দেহের বশে মেয়েকে মারধর করা হত। পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বললেও চলত মারধর। গর্ভবতী অবস্থায় বাপের বাড়িতে আসার পর পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য শ্বশুর বাড়ি না যাওয়ায় চরম আক্রোশ হয় রাজেশের।
অভিযোগ, মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে রাজেশ তার স্ত্রীকে নিষেধ করে। সে কথা না শোনায় সুযোগের অপেক্ষায় ছিল রাজেশ। নলহাটি গার্লসে পরীক্ষার সিট পড়ে হিরামণির। মঙ্গলবার ভৌত বিজ্ঞান অর্থাৎ শেষ পরীক্ষার দিন পরীক্ষাকেন্দ্রের গেটের সামনে এসে স্ত্রী হিরামণিকে পরীক্ষা দিতে বাধা দেয়। বলে পরীক্ষা না দিয়ে তার সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি যেতে হবে।
কিন্তু হিরামণি রাজি না হলে, পকেট থেকে অ্যাসিডের বোতল বের করে তার মুখে ছুঁড়ে মারে। আগেও তাদের মধ্যে সাংসারিক বনাবনি না হওয়ায় গ্রামে সালিশি সভা বসে।
প্রতিবেশী নাজেবুল সেখ জানান, রাজেশ তার মাকে নিয়ে থাকে। আমার ভাগ্নির সঙ্গে হিরামণি পরীক্ষা দিচ্ছিল। পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে রাজেশ হিরামণির মুখে অ্যাসিড মারে।
ঘটনাটি আমি তার বাবাকে জানালে তারা এসে মেয়েকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে সেখানেই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী চিকিৎসাধীন।
মেয়ের বাবা রুহুল আমিন রাজেশের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে। নলহাটি থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। রাজেশ সেখকে ধরতে তল্লাশি শুরু হয়েছে।