আসিফ রেজা আনসারীঃ কথায় আছে– বিশ্বাসে মেলায় বস্তু। আর সেই বিশ্বাসের সুরেই দেশ-বিদেশ থেকে গঙ্গাসাগরে ছুটে আসেন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী। বলা হয়– সংসার ধর্ম থেকে বেরিয়ে নির্বাণ লাভের যাত্রাপথই হল গঙ্গাসাগর। যা মনুষত্ব থেকে আধ্যাত্মিক জীবনের সূচনার অধ্যায়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে মেলা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তবে শর্তসাপেক্ষে মেলার অনুমতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। করোনা পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে জোর দেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুরনিগম বাবুঘাট ও শিয়ালদা স্টেশনে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। নিরন্তর সেই কাজ করে চলেছেন মেডিক্যাল টেকনলজিস্ট (ল্যাব) সাহিদ হাসান। তাঁর সঙ্গী রয়েছেন– সুবীর সাহা ও সঞ্জিত ঘোষ।
গঙ্গাসাগর হচ্ছে দিগন্তহীন নীল আকাশ ও সুবিস্ত+ত সমুদ্র সৈকতের সম্মিলনের এক পুণ্যভূমি। সেখানে সমবেত হবেন বহু মানুষ। তাঁদের করোনা পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক করেছে প্রশাসন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি কলকাতা পুরনিগম থেকেও এই কাজে সাহায্য করা হচ্ছে। শিয়ালদা স্টেশনে কোভিড টেস্ট সেন্টার করা হয়েছে। গত ৮ জানুযারি থেকে শুরু হওয়া সেন্টারে কাজ করছেন সাহিদ হাসান, সুবীর সাহা ও সঞ্জিত ঘোষ। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত করোনা পরীক্ষা করা হয়। তাঁরাই করোনা পরীক্ষার পর পজিটিভ মানুষদের আলাদা করছেন। প্রথমে Rapid অ্যান্টিজেন পরীক্ষার পর ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। কারও করোনা পজিটিভ ধরা পড়লেই সেফ হোমে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে সাহিদ হাসান বলেন, ২০২০ সালে করোনা আবহ শুরু হওয়ার পর থেকেই আমরা কাজ করছি। মানুষকে পরিষেবা দিতে গিয়ে পরিবারের লোকজনের থেকেও আলাদা থাকতে হয়। তিনি আরও বলেন– গঙ্গাসাগরে যেসব পূণ্যার্থী আসবেন তাঁদের পরিষেবা দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। সুবীর সাহা ও সঞ্জিত ঘোষদের কথাও এক। তাঁরাও মনে করেন– করোনা মানুষকে এক প্রকার অসহায় করে দিয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। করোনা মুক্তির কামনাও করছেন সকলে। দেশের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মিলন ও সম্প্রতি। সেই ছবিই ধরা পড়ছে শিয়ালদা স্টেশনে। এখানে হিমাচল প্রদেশ– উত্তরাখণ্ড থেকে আগত মহন্ত পুনম বা উজালেশ্বরীদের করোনা পরীক্ষা করেন সাহিদ হাসান বা সঞ্জিত ঘোষ।