পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : প্রধানমন্ত্রীর ‘নিরাপত্তা গাফিলতি’ মামলা ছিল সোমবার। সুপ্রিম কোর্ট কি বলে, সেদিকে নজর ছিল সবার। সোমবারের শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট বলে, ‘সেদিন যে গাফিলতি হয়েছিল তা পাঞ্জাব সরকারও মেনে নিয়েছে। এখন প্রশ্ন হল, কার তদন্তের পরিধি কতটা হবে।
কেন্দ্র যদি দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েই ফেলে, সেক্ষেত্রে আদালতের কী করার থাকতে পারে।’ এরপরেই একটি উচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নেয় শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা ও বিচারপতি সূর্য কান্ত জানান, পরে কমিটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান হবে। তবে আপাতত পাঞ্জাব সরকার ও কেন্দ্র যে তদন্ত চালাচ্ছে তা স্থগিত থাকবে।
এদিন সকাল ১০টায় মামলা বিষয়ক নথি আসে বিচারপতিদের হাতে। শুরুতেই পঞ্জাব সরকারের আইনজীবী দীপেন্দর সিং পাটওয়ালিয়া আদালতে বললেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজন মনে করলে পৃথক তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে। তাতে সবরকম সাহায্য করবে পাঞ্জাব সরকার। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টে যখন মামলা চলছে, তখন পাঞ্জাবের ৭জন পুলিশ অফিসারকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, কেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না ? পাঞ্জাব সরকার প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক। তা সত্ত্বেও পুলিশ আধিকারিকদের হেনস্থা করা হচ্ছে।’
প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা যদি রাজ্যের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চান, তাহলে এক্ষেত্রে আদালতের কি করার থাকতে পারে ?’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়, দয়া করে এটা মনে করেন না যে আমরা বিষয়টিকে সিরিয়াসলি নিচ্ছি না।’ বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, ‘এই আধিকারিকদের অপরাধী বলে কারা? কে শুনেছে তাদের কথা ? একটা সুষ্ঠু শুনানি হচ্ছে, আপনারা তার বিরুদ্ধে যেতে পারেন না ।’
এরপর কার্যত কেন্দ্রীয় সরকারকে ভর্ৎসনা করেন বিচারপতিরা। বিচারপতি হিমা কোহলি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার যদি সব ঠিক করে নেয়, তাহলে আমাদের কাছে এসেছেন কেন ?’ আরও বলেন, ‘কেন্দ্র সরকার যদি রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এখনই শাস্তিমুলক পদক্ষেপ শুরু করে তাহলে আদালতের হাতে বিচার্য বাকি কি রইল ?’ এরপর প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন,’কাউকে দোষী সাব্যস্ত করায় যদি প্রধান ইস্যু হয়ে থাকে তাহলে আমাদের কিছু করার নেই।’ এরপরেই শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয়, সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়ে দেওয়া হবে।
এরপর প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিজি আইনের ধারা উল্লেখ করে সলিসিটর জেনারেল আদালতে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এবং সমতুল্য কোন ব্যক্তির নিরাপত্তায় এসপিজি কেন্দ্রীয় এজেন্সি, রাজ্য পুলিশ এমনকি সিআইডির সহযোগিতা প্রয়োজন হয়।এক্ষেত্রে স্পষ্ট রাজ্য পুলিশের তরফে গাফিলতি করা হয়েছে। কারণ, যে ফ্লাইওভারে প্রধানমন্ত্রী আটকে ছিলেন, সেখানে সকাল থেকে লোক জড়ো হতে শুরু করেছিল। অথচ, এসপিজি-কে তা জানানো হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্পষ্টতই কর্তব্যে গাফিলতির হয়েছে। এসপিজি আইন এবং ব্লু বুক যদি দেখা হয় তাহলে শুনানির আর প্রয়োজন নেই।’