নয়াদিল্লিঃ বছরখানেক আগে প্রায় ১০০ মুসলিম মহিলার ছবি দিয়ে ‘তাঁরা নিলামে বিক্রি আছেন’ বলে ‘সাল্লি ডিলস’ নামে একটি অ্যাপ বাজারে ছাড়া হয় এবং তখন তা নিয়ে বিস্তর হইচইয়ের পর তা সরিয়ে নেওয়া হয়। এখন ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপের ব্যাপারে তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ দেখছে, কদর্য বুল্লি বাই অ্যাপ এর নির্মাতারাই ওই ‘সাল্লি ডিলস’ অ্যাপটি বানিয়েছিল।অসমের জোরহাটের ২১ বছরের যুবক নীরজ বিষ্ণোই–ই আগের অ্যাপটিও বানিয়েছিল বলে পুলিশ মনে করছে। কারণ ‘সাল্লি ডিলস’ অ্যাপে কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া সেলের সর্বভারতীয় সমন্বয়কারী হাসিবা আমিনের ছবি দিয়ে নিচে লেখা হয়েছিল, ‘এক মার্কিন ডলারে এই ‘শালি’(অশিষ্ট শব্দ) বিক্রির জন্য প্রস্তুত’।তারপরই লেখা হয়, ‘না এই শালি ৭৭ পয়সায় বিক্রি হল।@পিনাকিশিব৩কে বিক্রি করে দেওয়া হল। পিনাকি এখন শালিকে ভোগ করো’।দিল্লি পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার রমন লাম্বার নেতৃত্বে যে পুলিশদল এর তদন্ত করছে, তাদের বিভ্রান্ত করার জন্য নীরজ বলেছে, ‘জাভেদ আলম নামে এক মুসলিম যুবক ‘সাল্লি ডিলস’ অ্যাপটি বানিয়েছিল’। কিন্তু পুলিশ দেখছে, নীরজই মুসলিম–বিরোধী অ্যাপ বানানোর পাণ্ডা। ওর কম্পিউটার এবং মোবাইল পরীক্ষা করা হচ্ছে।তা ডিকোড করলেই পুলিশের কাছে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।নীরজ এত ধূর্ত যে ৩ জন ধরা পড়ার পর @জিয়ু৪৪ নামে ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে সে জ্ঞে সব মন্তব্য করে তা নিচে প্রতিবারই সে লিখত, ‘ফ্রম নেপাল’। যেন সে নেপাল থেকে এইসব কথা লিখছে।
এর আগে পবিত্র ঈদ এর দিন এই নীরজই এক সুন্দরী পাকিস্তানি যুবতীর ভিডিয়ো দিয়ে ইউ টিউবের ‘লিবারেল ডোজ’ নামে এক চ্যানেলে বলা হয়, ‘যারা দেখতে চান কামুক দৃষ্টিতে মেয়েটিকে দেখুন’। সেই ভিডিয়োটির নাম দেওয়া হয় ‘ঈদ স্পেশ্যাল’।বিভিন্ন সময়ে @লিবারেলডোজ, @পিনাকিশিব৩, @সাল্লিডিলস১০১, @জিয়ু২০০২, @জিয়ু০০৭, @জিয়ু৮৪, @জিয়ু৯৪ অ্যাকাউন্ট খুলে মুসলিম মেয়েদের অবমাননা করাই ছিল নীরজের একমাত্র লক্ষ্য। ‘ডেমন স্লেয়ার’ নামে এক অনলাইন গেমের প্রধান চরিত্র জিয়ু। সেই থেকেই জিয়ু নামটি নীরজ নিয়েছে বলে পুলিশের কাছে জানিয়েছে।সকলকে বিভ্রান্ত করতে নীরজ জিয়ুর শেষ অ্যাকাউন্টটি খোলে জাভেদ আলম নাম দিয়ে। সেখানে দাড়িওলা এক মুসলিম ছেলের ছবি দেওয়া হয়।কংগ্রেসের হাসিবা আমিন তাঁর ছবি দিয়ে অশ্লীল মন্তব্য নিয়ে থানায় এফআইআর করলে নীরজ ভুয়ো ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে হাসিবাকে ফের অপমান করে ট্যুইট করে। তাতেই পুলিশ ধরতে পেরেছে যে, সাল্লি ডিলসও এই নীরজেরই কাজ ছিল। ট্যুইটারে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলা, অন্যের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কাউকে অশ্লীল আক্রমণ করা, কদর্য অ্যাপ তৈরি করে বাজারে ছাড়ায় নীরজ সিদ্ধহস্ত।ও এখনও পুলিশকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করে চলেছে বলে খবর। তবে কম্পিউটার এবং মোবাইল ডিকোড করলে নীরজের খেলা শেষ হয়ে যাবে বলে পুলিশের ধারণা।