মুহাম্মদ রাকিব: উলুবেড়িয়া ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে ৪০ কিলোমিটার রাস্তা উজিয়ে দু’টি হাসপাতাল ঘুরে ৩ কন্যাসন্তানের জন্ম দিলেন শ্যামপুর থানা এলাকার রাধাপুরের বাসিন্দা তৌহিদা বিবি। দু’টি সন্তান জন্ম নিল ব্লক হাসপাতালে, আর তৃতীয়টি জন্ম নেয় মহকুমা হাসপাতালে। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের তৎপরতায় তৌহিদা ৩ সন্তান প্রসব করলেন সুষ্ঠুভাবে। যদিও ৩ নবজাতকের ওজন কম হওয়ায় তারা উলুবেড়িয়া হাসপাতালে এসএনসিইউ বিভাগে ভর্তি। যদিও তৌহিদা বিবি সুস্থ আছেন।
একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দেওয়ার ঘটনা ভূরি-ভূরি ঘটে থাকে। সেখানে নতুনত্ব কিছু নেই। কিন্তু তৌহিদা বিবির সমস্যাটা ছিল একটু অন্যরকম। তার প্রথম দুই কন্যাসন্তান ভূমিষ্ঠ হয় শ্যামপুরের কমলপুর ব্লক হাসপাতালে। আর তৃতীয় কন্যাসন্তানের জন্ম প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, শ্যামপুর-১ ব্লকের রাধাপুরের বাসিন্দা তৌহিদা বিবি প্রসব বেদনা নিয়ে বৃহস্পতিবার ভর্তি হয়েছিলেন কমলপুর ব্লক হাসপাতালে। সেখানে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে তিনি দু’টি কন্যাসন্তান প্রসব করেন। এরপর তৃতীয় সন্তান প্রসব করার সময় কিছু জটিলতা তৈরি হওয়ায় চিকিৎসকরা তৌহিদাকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন।
কমলপুর ব্লক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সেখানে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় তাকে পাঠানো হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। অ্যাম্বুলেন্সে দ্রুত তৈহিদাকে নিয়ে আসা হয় উলুবেড়িয়া। দুপুর ১.১৫ মিনিটে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে তৃতীয় সন্তান প্রসব করেন। তবে তিন কন্যাসন্তানই অপরিণত। তাদের রাখা হয়েছে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটে (এসএনসি ইউ)। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিন শিশুকন্যার শ্বাসকষ্ট রয়েছে। ফলে তাদের অক্সিজেন-সহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সময়ের আগে অর্থাৎ ৩২ সপ্তাহে ওই মহিলা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। প্রথম দু’টি কন্যা সন্তানের ওজন ১ কেজি ৩০০ গ্রাম করে। তবে তৃতীয় সন্তানটির ওজন ১ কেজি ৩২৫ গ্রাম।
উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক অর্ঘ্য মান্ডি বলেন, ‘ওই মহিলার সমস্যা হতে পারত। তবে রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা প্রবল ছিল। কিন্তু আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। ফলে মহিলা সুস্থ রয়েছেন।’ উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার সুদীপরঞ্জন কাঁড়ার বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসকরা দক্ষতার সঙ্গে ওই মহিলার প্রসব করিয়েছেন এবং তিনি সুস্থ আছেন। তবে শিশুগুলির সমস্যা রয়েছে। তাদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটের কর্তব্যরত চিকিৎসক পুষ্কর মিত্র বলেন, ‘শিশুগুলোর ওজন অনেকটাই কম। তার উপর তাদের ফুসফুসের সমস্যা। সুগার কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় যাতে তাদের সুস্থ রাখা যায় সেজন্য তাদের অক্সিজেন-সহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে।’