পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : ধর্ষণের অভিযোগে ১৬ বছর কারাদণ্ডের সাজা ভোগ করেছেন কৃষ্ণাঙ্গ অ্যান্থনি ব্রডওয়াটার।সম্প্রতি অ্যান্থনিকে সম্পূর্ণ নির্দোষ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত। এবার সেই ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন ধর্ষিতা মার্কিন লেখিকা অ্যালিস সেবোল্ড। ‘দ্য লাভলি বোনস’-এর মতো বেস্ট সেলার উপন্যাসের রচয়িতা অ্যালিস ক্ষমা চেয়েছেন অভিযুক্ত কৃষ্ণাঙ্গ অ্যান্থনি ব্রডওয়াটারের কাছে।
১৯৮১ সালে অ্যালিস ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন।তখন তাঁর বয়স ছিল ১৬ বছর। সেই ঘটনার কয়েক মাস পরে অ্যান্থনিকে দেখে নির্যাতনকারী হিসেবে সন্দেহ করেন লেখিকা। তাঁর সন্দেহের ভিত্তিতেই পুলিশ গ্রেফতার করে তাঁকে। প্রথম থেকেই অ্যান্থনি ব্রডওয়াটার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করলেও ১৯৮২ সালে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি। দীর্ঘ ১৬ বছর জেল খাটেন। অথচ তিনি ছিলেন নির্দোষ।১৯৯৮ সালে তিনি ছাড়া পান। কিছুদিন আগে মামলাটির পুনর্বিচার হলে সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হন ব্রডওয়াটার।
এ ঘটনায় তাঁর কাছে ক্ষমা চাইলেন অ্যালিস। তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই দুঃখিত। এবং আপনাকে যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, সে জন্য আমি গভীর অনুতপ্ত।’ সেই সঙ্গে তিনিও এও জানিয়েছেন, ‘আমি জানি কোনও ক্ষমা প্রার্থনাই আপনার জীবনকে আর বদলে দিতে পারবে না।’ অন্যায় ভাবে যে ব্রডওয়াটারের জীবন থেকে এতগুলো বছর কেড়ে নেওয়া হয়েছে অ্যালিস নিজেও সেকথাও মেনে নেন ।
চুলের মাইক্রোস্কপিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতেই নির্দোষ ঘোষণা করা হয় ব্রডওয়াটারকে।অ্যালিস সেই প্রসঙ্গ তুলে জানিয়েছেন, গত ৮ দিন যাবৎ তিনি ভেবে চলেছেন, কী করে এমনটা ঘটল। সেই সঙ্গে তিনি আক্ষেপ করেছেন, আসল ধর্ষকের পরিচয় হয়তো কোনও দিনই জানা যাবে না। হয়তো সেই দুষ্কৃতী আরও অনেক নারীকেই ধর্ষণ করেছে। কিন্তু তাকে হয়তো দণ্ডিত করা যাবেই না।
ব্রডওয়াটারের বয়স এখন ৬১।তাঁর জীবনের চল্লিশটা বছর চলে গিয়েছে ধর্ষকের তকমা ঘোচাতে । এর মধ্যে দীর্ঘ ১৬টি বছর তাঁর কেটেছে কারাগারের অন্ধকারে।তাঁর আইনজীবীরা জানিয়েছেন, অ্যালিস ক্ষমা চাওয়ায় স্বস্তি পেয়েছেন তিনি। এক গভীর ক্ষতের মুখে দাঁড়িয়ে হয়তো এইটুকু তাঁর কাছে একমাত্র সান্ত্বনার আলো।