পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে (British Prime Minister Boris Johnson) ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন বরিস জনসন। বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই ভারতে আসবেন বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
দুই রাষ্ট্রনেতার আলোচনায় মধ্যে দিয়ে মোদি জানিয়েছেন, তিনি চান যত শীঘ্রই সম্ভব ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে আসুন। বৈঠকের একদিন পরেই বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বরিস জনসনের আমন্ত্রণ গ্রহণের বিষয়টি জানিয়েছেন।
গ্লাসগোতে (Glasgow) দুই নেতা বৈঠকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
সোমবার, গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত হওয়া সিওপি ২৬ জলবায়ু সম্মেলন (COP26 Climate Conference) চলাকালীনই বরিসকে ভারত সফরে আসার আমন্ত্রণ জানান মোদি। এই সম্মলনে দুই রাষ্ট্রনায়কের মধ্যে সবুজ হাইড্রোজেন, পুনর্নবীকরণযোগ্য এবং পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তি, অর্থনীতি এবং প্রতিরক্ষার মতো ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
গ্লাসগোর জলবায়ু সামিটে ‘অভিযোজন ও শুধুমাত্র প্রশমন নয়’–এটাই ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মূল মন্ত্র। সোমবার স্টকল্যাল্ডের শহর গ্লাসগো জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাষ্ট্রনেতাদের বৈঠক সিওপি ২৬ এ অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) বলেন, গোটা বিশ্বকেই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। সেই কারণে উন্নয়ন নীতি ও পরিকল্পনাগুলির প্রধান অংশ হিসেবে অভিযোজন করতে হবে। এদিন বৈঠকে ভারতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকিবিলা কারর জন্য কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তাও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন তিনি।
জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদি পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কথা বলেন। এর মধ্যে হল ভারত ২০৩০ সালের মধ্যে নন-ফসিল শক্তির উৎপাদন ৫০০ জিগাওয়াটে নিয়ে যাবে। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত পুনর্নবিকরণযোগ্য শক্তি থেকে তার শক্তির চাহিদার ৫০ শতাংশ পুরণ করবে। ভারত এখন থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত মোট কার্বন নিঃসরণ এক বিলিয়ন টন কমিয়ে আনবে। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত তার অর্থনীতির কার্বন নির্ভরতা ৪৫ শতাংশ কমিয়ে আনবে। ২০৭০ সালের মধ্যে ভারত নিট শূন্য নির্বমণের লক্ষ্যমাত্র অর্জন করবে।
ব্রিটেনে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার গায়ত্রী কুমার জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই দুই দেশের সরকার নিজেদের পরিকল্পনা গুলিকে বাস্তবায়িত করতে আগ্রহী। তিনি জানিয়েছেন, ২০২২ সালের মার্চ মাসে অন্তর্বর্তী চুক্তি সাক্ষর করে নেওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এবং সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী হলে ২০২২ সালের নভেম্বরের মধ্যে চুক্তি রূপায়ন হওয়া সম্ভব।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রসংঘের সিওপি ২৬ সম্মেলনের শুরুতে ১২০টিরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকারের প্রধান দুই দিনের শীর্ষ সম্মলনের জন্য গ্লাসগোতে আলোচনা করছেন। আয়োজকরা বলেছেন যে বিপর্যয়কর বৈশ্বিক উষ্ণতা থেকে দূরে মানবতার পথ নির্ধারণের জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।