বিপাশা চক্রবর্তী, কলকাতা: ১ জুন সপ্তম অর্থাৎ শেষ দফার নির্বাচন। বঙ্গে লোকসভা ভোট হল ৯টি কেন্দ্রে, বিধানসভার উপনির্বাচন ১টি কেন্দ্রে। লোকসভা ভোটের ৯ কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে কলকাতা উত্তর, কলকাতা দক্ষিণ, দমদম, যাদবপুর, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার, বারাসত ও বসিরহাট৷ অন্যদিকে, উপনির্বাচন রয়েছে বরানগরে।
ভোটকে ঘিরে কার্যত সকাল থেকেই বনধের চেহারা নিল কলকাতা ও তার আশেপাশের এলাকা। নেই বাস, অটো। মেট্রোতেও নামমাত্র যাত্রী। লোকাল ট্রেনগুলিতেও একই অবস্থা। ভিড় নেই হকারদের। প্রতিদিনের ভিড়ে ঠাসা ট্রেনগুলির চেনা চিত্র আজ উধাও। ২০২০-২১ সালে করোনার কারণে রাজ্যে জারি হয়েছিল লকডাউন। আজ ভোটের দিন সেই চেনা চিত্রই আবার ফিরে এল। রাস্তাঘাট জনমানবশূন্য। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ রাস্তাঘাটে বের হয়নি।
প্রধান সড়কগুলিতে মাঝে মধ্যে এক আধটা বাস থেকে অটোর দেখা মিলছে। সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেই বললেই চলে। সমস্ত কর্মচঞ্চলতা উধাও। ছুটির মুডে তিলোত্তমা। পাড়ার দোকানগুলিও প্রায় বন্ধ। নেই প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততা। তবে মাংসের দোকানগুলিতে লাইন বেশ চোখে পড়ার মতো। ভোট দিয়ে বাজারের থলে হাতে নিয়ে মাংসের দোকানে মানুষকে লাইন দিতে দেখা গেছে। বলা যায় আজ কর্মবিরতি পালন করল কলকাতাবাসী।
শনিবার ভোট, তার পরের দিন রবিবার, তাই দুদিন ছুটি উপভোগ করতে ব্যস্ত বঙ্গবাসী। বেহালা থেকে বালিগঞ্জ, শ্যামবাজার থেকে গড়িয়াহাট, পার্ক সার্কাস মোড়, আশুতোষ মুখার্জি রোড, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, রাজা সুবোধ মল্লিক রোড থেকে শুরু করে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, কলেজ স্ট্রিট, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোড, মল্লিকবাজার, পার্ক স্ট্রিট সমস্ত রাস্তাই জনমানবহীন। গড়িয়াহাটে যে উন্মাদনা থাকে, সেই চেনা চিত্রটা আজ নেই। কোথাও বেচাকেনা থেকে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে জামা কাপড় দেখার কোনও হিড়িক নেই।
অটো থেকে বাসের সংখ্যা অত্যন্ত কম থাকায় হয়রানির শিকার হতে সাধারণ মানুষকে। ভোটের কারণে বেশ কয়েকদিন ধরেই রাস্তাঘাটে বাস নেই। থাকলেও একটা থেকে দুটো বাস। সব বাসগুলিই এই সময় নির্বাচনের কাজে তুলে নেওয়া হয়। টানা কয়েকদিন ধরেই ভোগান্তির শিকার নিত্যযাত্রীরা।
এদিন গড়িয়াহাটে দাঁড়িয়ে থাকা রীনা বিশ্বাস জানান, প্রায় একঘণ্টার বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছি। যাব সল্টলেক। জানি না বাস কখন পাব। ঠাকুরপুকুরের বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা প্রীতম সর্দার জানান, ভোট মানেই সাধারণ মানুষের হয়রানি। ভোটের জন্য সব বাস তুলে নিয়েছে।
এই সুযোগে অটোগুলো বেশি টাকা হাঁকছে। কিন্তু আমাদের মতো সাধারণ মানুষ নিরুপায়। তাই সেই টাকা দিয়েই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এদিন হাওড়া, শিয়ালদা স্টেশন চত্বরেও কার্যত ট্যাক্সির সংখ্যা কম।
তবে রাস্তার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পুলিশের টহলদারি ভ্যান, মোটরবাইকের সার্জেন্ট রয়েছে, গাড়িতে পুলিশকর্মীর সঙ্গে থানার অফিসারকে নজরদারি করতে দেখা গিয়েছে। রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারিও।