কোল্লাম, ৮ মে: অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন কেরলের এক অ্যাম্বুলেন্স চালক। আড়াই দিন ধরে প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার ননস্টপ অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে রোগীকে বাংলায় পৌঁছে দিলেন চালক অরুণ। কেরলের বছর আঠাশের যুবকের সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন অনেকেই। কুর্নিশ জানিয়ে চালককে সম্মানিতও করেছে এলাকাবাসী।
জানা গিয়েছে, বাংলার রায়গঞ্জের ষাটোর্ধ এক মহিলা সহ তাঁর ছেলে কেরলের করুণাগাপ্পল্লী গ্রামে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতেন। সেখানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই মহিলা। স্ট্রোকে শয্যাশায়ী ছিলেন। তাঁর শেষ ইচ্ছা ছিল পুত্র সৌতিষকে নিয়ে নিজের জন্মস্থান রায়গঞ্জে ফিরে যাওয়ার। তবে প্লেনে করে যাওয়ার আর্থিক সামর্থ্য ছিল না। এরপরই এগিয়ে আসেন অ্যাম্বুলেন্স চালক অরুণ। একপ্রকার ঝু্কি নিয়েই ২২শে এপ্রিল সকালে কেরল থেকে যাত্রা শুরু করেন তিনি।
বহু চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করে মাত্র আড়াই দিনে ২৮৭০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে রোগীর নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দেন অ্যাম্বুলেন্স চালক। তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা ও ওড়িশা হয়ে ২৪ এপ্রিল বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের রায়গঞ্জে পৌঁছায় অ্যাম্বুলেন্সটি। অরুণের কথায়, রিফুয়েলিং ব্যতীত, গন্তব্যে পৌঁছানো পর্যন্ত কোথাও থামেনি গাড়ি। তিনি বলেন, ‘আমি এর আগে পশ্চিমবঙ্গে গিয়েছিলাম। তাই রাস্তাটা আমার চেনা ছিল। আমার দায়িত্ব ছিল রোগীকে তার গন্তব্যে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া। আমার অ্যাম্বুলেন্সকে ধন্যবাদ। অবশেষে রোগীকে নিরাপদে পৌঁছে দিতে পেরেছি।’
অরুণের বক্তব্য, “রোগীর ক্রমাগত যত্নের প্রয়োজন হওয়ায় সেভাবে দীর্ঘ বিরতি নিতে পারিনি। শুধুমাত্র রিফুয়েলিং এর জন্য ১০-১৫ মিনিট দাঁড়াতে হয়েছে। রায়গঞ্জে পৌঁছানোর পর সেখানকার মানুষ আমার থাকার ব্যবস্থা করেন। সেখানে একদিন বিশ্রাম নিয়ে ফের প্রায় ৫৮০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ২৬ এপ্রিল কেরলে ফিরে আসি।”