পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ উত্তরাখণ্ডে বিজেপি সরকার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে– রাজ্যের যে সব এলাকায় মুসলিম জনসংখ্যা (MUSLIMS POPULATION) বাড়ছে তা চিহ্নিত করতে। এই রাজ্যে ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশের সঙ্গেই বিধানসভা নির্বাচন হবে। তার আগেই এভাবে ধর্মীয় মেরুকরণের কাজ শুরু করে দিয়েছে সরকার। বিজেপি যদি এ কাজ করত তাহলে একটা মানে হত। সরকারকে এই কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি। সেই কারণেই রাজ্যজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিজেপি নেতারা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছিলেন– ‘বহু জায়গায় দেখা যাচ্ছে মসজিদ গড়ে উঠছে– বেশিরভাগই বেআইনি নির্মাণ। আর সেখানে দলে দলে নামায পড়া হচ্ছে’। এরপরই রাজ্য সরকার নড়েচড়ে বসে। ২৪ সেপ্টেম্বর রাজ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এক আদেশনামা জারি করে রাজ্যে যেসব বহিরাগত মানুষ বাস করছে তাঁদের চিহ্নিত করতে হবে জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের। তাঁদের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। তাদের কার কী অপরাধমূলক কাজের ইতিহাস রয়েছে তা খুঁজে বের করতে হবে। কতজন ব্যবসার কাজে রাজ্যে রয়েছেন এবং কতজন রাজ্যের পাকাপোক্ত বাসিন্দা হয়ে গিয়েছেন– তার তালিকা করতে বলা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে কমিটি গড় হবে সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য। উদ্দেশ্য কিন্তু মুসলিমদের চিহ্নিত করা।
মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন– যেসব এলাকায় এক বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা বাড়ছে সেই সব এলাকায় জমিবাড়ি কেনা বেচায় স্থগিতাদেশ জারি করতে। কেউ যেন চাপে পড়ে জমি বিক্রি করতে না পারে– তা দেখতে হবে। বাইরে থেকে এসে এখানে আধার কার্ড বা ভোটার পরিচয়পত্র তৈরি করেছে– কতজন তার তালিকা তৈরি করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে আরও বলা হয়েছে– রাজ্যের কিছু এলাকায় এক সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করতে শুরু করায় সেইসব এলাকার জনসংখ্যাচিত্র বদলে গিয়েছে। এরকম হতে থাকলে রাজ্যে শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করে রাজ্য সরকার।
রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব আনন্দ বর্ধন বলেছেন– ‘রাজ্য সরকার মনে করছে, এক সম্প্রদায়ের লোক রাজ্যের কিছু এলাকায় সংখ্যাগুরু হয়ে গিয়েছে। এটা খুব উদ্বেগের ব্যাপার। তাই ওই বিশেষ এলাকাগুলিতে সম্প্রীতি বজায় রাখতে বলা হয়েছে ১৩ জেলাসুপারকে। তাঁদের বলা হয়েছে– সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। এটি এক ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। অপরাধীরা এই রাজ্যে আশ্রয় নিলে সরকার তো চোখ বুজে থাকতে পারে না। ডিজিপিকেও বলা হয়েছে– এই বিষয়ে এখনই কাজে নেমে পড়তে হবে।’
স্বরাষ্ট্রসচিবের কথাতেই স্পষ্ট– রাজ্যে এবার মুসলিম-বিরোধী অভিযান চালানো হবে। এ ছাড়া নানা ছুতো তুলে আক্রমণ করার অবকাশ তো রয়েছেই। নির্বাচন যে এগিয়ে আসছে। জয় নিশ্চিত করতে হবে তো।