পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: লোকসভা ভোটের আবহে ঘোর বিপদে কর্নাটকের রাজ্য-রাজনীতি! দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা জনতা দলের (সেকুলার) প্রধান এইচডি দেবগৌড়ার নাতি তথা বিদায়ী সাংসদ প্রজ্জ্বল রেভান্না সহ তার বাবা দেবগৌড়া এইচডি রেভান্নার ‘যৌন কেচ্ছা’র ঘটনায় বিপাকে গেরুয়া শিবির। এই ডামাডোলের সময় বিজেপি নেতার একটি সতর্কীকরণ চিঠি সামনে এসেছে, যা নিয়ে রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর কর্নাটকের দলের সভাপতি বিওয়াই বিজয়েন্দ্রকে রাজ্যের বিজেপি নেতা দেবরাজে গৌড়া চিঠিতে লেখেন, ‘একটি পেনড্রাইভে প্রায় ৩০০০টি সেক্স ভিডিয়ো রয়েছে। এই ভিডিয়ো ফুটেজ দেখিয়ে রেভান্না মহিলাদের ব্ল্যাকমেল করত। এটি বিজেপি-জেডি (এস) জোটের জন্য একটি বড় ধাক্কা হতে পারে। আরেকটি পেন ড্রাইভে কিছু ছবি পাওয়া গেছে, সেগুলি কংগ্রেসের নেতাদের কাছে পৌঁছে গেছে। দেবরাজে গৌড়া চিঠিতে আরও উল্লেখ করেন, ‘যদি আমরা জেডি (এস) এর সঙ্গে থাকি, লোকসভা নির্বাচনে হাসানে জেডি (এস) প্রার্থীকে মনোনীত করি তবে এই ভিডিওগুলি একটি ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে, আমরা কলঙ্কিত হব। একটি ধর্ষকের পরিবারের সঙ্গে জোটবদ্ধ দল হিসেবে আমরা চিহ্নিত হব। এটি জাতীয়ভাবে আমাদের দলের ভাবমূর্তির জন্য একটি বড় ধাক্কা।’
দেবরাজে গৌড়া সেই সময় বিধানসভা নির্বাচনে দলের হোলেনারাসিপুরের প্রার্থী ছিলেন। জেডিএস-২০২৩ সালের এনডিএ-তে যোগ দেয়। সোমবার, কংগ্রেস নেতা পবন খেরা দেবরাজে গৌড়ার চিঠির রি টুইট করে বলেছেন, ‘এই অভিযোগ জানা সত্ত্বেও কেন বিজেপি জেডি(এস)-এর সঙ্গে জোট করার জন্য এগিয়ে গেল। কেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌন কেচ্ছার কারণ জেনেও এখনও নীরব? পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী প্রিয়াঙ্ক খাড়গে তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, ‘এত কিছু জানা সত্ত্বেও বিজেপি ভোটে এই ধরনের মানুষকে হাসান থেকে টিকিট দিয়েছেন।’
শিবসেনা নেতা প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী সোমবার ট্যুইট করে রেভান্নার প্রার্থিতা বাতিলের দাবি তুলে তার নির্বাচনী এলাকায় ফের ভোটের আর্জি জানিয়েছেন। রেভান্নাকে জার্মানি থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি বসানোর দাবি করেছেন তিনি। কেলেঙ্কারি কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া মামলার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করেছে।
২৬ এপ্রিল কর্নাটকে ভোটে হাসান লোকসভা কেন্দ্র থেকে জোট প্রার্থী ছিলেন রেভান্না। রবিবার জেডি(এস) বিধায়ক শরনাগৌড়া কান্দকুর, দলের প্রধান এইচডি দেবগৌড়াকে চিঠি লিখে প্রজ্জ্বল রেভান্নাকে বহিষ্কারের আবেদন জানান। বাড়ির রাঁধুনির অভিযোগে ভিত্তিতেই হোলেনারাসিপুর থানায় মামলা রুজু হয়েছে পিতা-পুত্রের নামে। ৪৭ বছর বয়সী পরিচারিকার অভিযোগ, ‘প্রজ্জ্বল রেভান্নার বাড়িতে কাজের চার মাসের মাথাতে তাকে তার ঘরে ডেকে পাঠাত। বাড়িতে ৬ জন পরিচারিকা সবাই ভয়ে ভয়ে থাকতেন। যখনই রেভান্নার স্ত্রী ঘরে থাকতেন না, তাদের রুমে ডাকতেন। ফল খাওয়ার নাম করে, তাদের শাড়ির পিন খুলে দিতেন। ওই পরিচারিকার আরও অভিযোগ, তার মেয়ের সঙ্গেও ফ্লার্ট করার চেষ্টা করেছিলেন রেভান্না, তিনি বুঝতে পেরে নাম্বারটি ব্লক করে দেন।’