পুবের কলম প্রতিবেদক: রাম নবমী নিয়ে মঙ্গলবার বাংলায় জনসভা থেকে তৃণমূলকে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, বাংলায় রাম নবমী আটকাতে ষড়যন্ত্র করছে তৃণমূল। আদালতে গিয়ে রাম নবমীর অনুমতি নিতে হচ্ছে। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে তার জবাব দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল বলেছে, হয় বঙ্গ বিজেপি কিছুই জানে নানয়তো প্রধানমন্ত্রীকে কেউ সঠিক তথ্য দেয়নি। কেউ শোভাযাত্রা আটকায়নি।
আর এদিন রাম নবমী নিয়ে আরও একবার সতর্ক করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জলপাইগুড়ির প্রচারমঞ্চ থেকে বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘আমি জানি বিজেপি-র প্ল্যান আছে অশান্তি বাধানোর। ১৯ তারিখ ভোট হবে। ১৭ তারিখ অশান্তি করার প্ল্যান অনেকদিন আগেই করে রেখে দিয়েছে। আমরা অশান্তি চাই না। শান্তি চাই। অশান্তি করে ভোট দখল করবে। তারপর দেশ বেচে দেবে। আমি হাত জোর করে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরুদের বলছি কেউ অশান্তি করতে দেবেন না। ৪-৫দিন আগের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি চালসা আসছিলাম। আমার গাড়ি দেখিয়ে বলছে চোর-চোর। ওদের পিতৃদেবের পয়সায় কোনওদিন এক কাপ চা খেয়েছি? আমি দোকানে চা খেলেও পয়সা দিয়ে খাই।
আমি সরকার থেকে পয়সা নিই না। সরকারি গাড়ি চড়ি না। আমি ইচ্ছা করলে পেনশন পেতে পারি। আমি লক্ষ টাকার উপর মাইনে নিতে পারি। যা আছে তাতেই চলে। এত বড় সাহস আমার গাড়ি দেখিয়ে বলছে চোর চোর। চাইলে জিভ টেনে ছিড়ে নিতে পারতাম। কিন্তু তা করিনি। কারণ, আমি মোদি-শাহর মতো নই।’’ এরপর মমতা বলেন, ‘‘আমি যুব শক্তির কাছে আবেদন করছি দেশকে বাঁচাও। মোদি-অমিত শাহর হাত থেকে দেশ বাঁচাও। ওরা ২০০ পার হবে না। বাংলায় আমরা জিতব।
তামিলনাড়ুতে স্ট্যালিন জিতবে, পঞ্জাবে অরবিন্দ জিতবে, অন্যান্য যে জায়গায় যে শক্তিশালী যে দল আছে সে জিতবে। কোচবিহার, মালদহ, বালুরঘাট হচ্ছে বিমানবন্দর। আমরা করেছি। কত হোটেল কত হোমস্টে করেছি। চারিদিকে শুধু আলো আর আলো। আমার আগে উত্তরবঙ্গে এত কেউ আসত? আলিপুরদুয়ার নতুন জায়গা কে করেছে? আপনারা মাল মহকুমা চেয়েছেন। করেছি। বানারহাট নতুন ব্লক হয়েছে। আমরা সব পজিটিভ করে দিয়েছি। কৃষকদের আমি ভাতা দিই। চা বাগান একটাও খুলল না। আমরা ৫৯ চা বাগান খুললাম। আমরা উদবাস্তুদের পাট্টা দিই। প্রধানমন্ত্রী কোচবিহারে এলেন মিটিং করতে। কই জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ির মানুষের দুঃখের কথা বললেন না। সারা বছর দেখা যায় না। ভোটের সময় ভোট পাখিরা উড়ে আসে।’’
উত্তরবঙ্গের ঝড়ে কয়েক সপ্তাহ আগেই ভেঙে গিয়েছে বহু ঘরবাড়ি। এই পরিস্থিতিতে মমতা বলেন, ‘‘আমি কথা দিচ্ছি ১১ লক্ষ মানুষের আবাসন এই বছরেই আমরা করব। আপনারা জানেন, ভোট না হলে আমার কাছে এক সেকেন্ডের ব্যাপার ছিল। কিন্তু ভোট চললে আমরা অনেক কিছু করতে পারি না। কারণ, বিজেপির কমিশন বসে আছে। আমরা ওদের লিখেছিলাম বারবার। যাঁদের বাড়ি ঘর ভেঙে গিয়েছে, তাঁদের ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হোক। যাতে তাঁরা তাঁদের বাংলার বাড়ি পান। কিন্তু কমিশন বলল, ‘না। যা প্রচলিত নিয়ম আছে। তাতেই হবে। ওই নিয়ম অনুযায়ী যাঁদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছে, তাঁরা ২০ হাজার পাবেন। যাঁদের আংশিক ভেঙে গিয়েছে, তাঁরা পাঁচ হাজার পাবেন।’’ তবে এই অর্থে যে কারও বাড়ি বানানো সম্ভব নয়, সে কথাও বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘‘একটা বাড়ির উপর দিয়ে ঝড় চলে যাওয়া মানে সে বাড়ি উপড়ে ফেলার মতোই অবস্থা। আমি কথা দিচ্ছি, ১১ লক্ষ মানুষের আবাসন এই বছরেই আমরা করব। ডিসেম্বরের আগে তার টাকা রিলিজ করব। প্রথম কিস্তি। তার মধ্যে আপনাদের বাড়িগুলোও থাকবে। বাড়িটা ভাল করে তৈরি করে নেবেন।’’