মালদ্বীপ, ২৫ মার্চ: ভারত-মালদ্বীপ সুসম্পর্কের অবনতি হয়েছে। এবার জেদ না করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করুন! বার্তা দিলেন মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মহম্মদ সোলি। বর্তমান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুকে সর্তক করে মহম্মদ সোলি জানিয়েছেন, চিনের থেকে ঋণ নিয়েই বিপাকে পড়েছে মালদ্বীপ। তাই জেদ ধরে বসে না থেকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। প্রতিবেশী দেশগুলো মালদ্বীপকে অবশ্যই সাহায্য করবে।
গত বছরের নভেম্বরে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন মুইজ্জু। প্রথম থেকেই তিনি ভারতের বিরুদ্ধে কড়া ভাষা প্রয়োগ করেছেন। নির্বাচনী প্রচার থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্টের ভাষণে বারবার ভারতবিরোধী সুর চড়িয়েছেন মুইজ্জু। প্রসঙ্গত, মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য ১৫ মার্চের ডেডলাইন দিয়েছিল নয়া প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুইজ্জু সরকার। দেশটির বর্তমান সরকার চিন-ঘনিষ্ঠ। সেজন্যই ভারতের কোনওরকম ‘খবরদারি’ তারা চাই না বলে মনে করে কূটনৈতিক মহল। মালদ্বীপে মোট ৮৮ জন ভারতীয় সেনা সরাতে বলা হয়। স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীর এই সেনারা সে দেশকে দেওয়া ভারতের বিমান ও হেলিকপ্টার পরিষেবার তদারক করতেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় উদ্ধারকাজ চালাতেন এবং দুর্গম দ্বীপগুলোয় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করতেন। গত বছরের নির্বাচনে মোহাম্মদ মুইজ্জু দ্বীপপুঞ্জটির ক্ষমতায় আসেন ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারণা চালিয়ে। ক্ষমতায় আসার পরপরই শুরু হয় তার নেতৃত্বে ‘ভারত বর্জন’ নীতির বাস্তবায়ন। এরপরই শুরু হয় ভারত-মালদ্বীপের কূটনৈতিক টানাপোড়েন। প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর বক্তব্য ছিল, “আমরা দেশের নাগরিকদের নিশ্চিত করতে চাই, যে দেশের মাটিতে কোনও বিদেশী সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি নেই।”
দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্টের এমন আচরণকেই তোপ দেগেছেন মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সোলি। তাঁর কথায়, ভারতের থেকে মালদ্বীপের মুদ্রায় মোট ৮০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু চিনের থেকে নেওয়া হয়েছে ১৮০০ কোটি। অর্থাৎ মালদ্বীপের আর্থিক সংকটের মূল কারণ চিনা ঋণ। তবে এই সমস্যা কাটাতে ভারতের মতো প্রতিবেশীদের থেকে মালদ্বীপ সাহায্য চাইতে পারে বলেই মত সোলির। তিনি বলেন, “প্রতিবেশী দেশগুলো সাহায্য করবে বলেই আমরা আশাবাদী। তাই জেদ ধরে বসে না থেকে আলোচনা শুরু করতে হবে। অনেকেই আমাদের সাহায্য করতে পারবে, কিন্তু মুইজ্জু তো মিটমাট করতেই রাজি নন।”
অন্যদিকে, গত ৯ মার্চ, মালদ্বীপ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন দ্বীপ রাষ্ট্রের আরেক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ। ‘ভারত বর্জন’ নীতির ফলে মালদ্বীপের পর্যটন শিল্প নিয়েও অশনি সংকেতের কথা বলেছিলেন তিনি। মোহাম্মদ নাশিদ জানিয়েছিলেন, “মালদ্বীপের জনগণের পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চাইছি।”