নয়াদিল্লি, ১০ মার্চ: নির্বাচনী বন্ডের তথ্যপ্রকাশ নিয়ে সোমবার দু’টি আর্জি শুনবে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। বন্ড সংক্রান্ত তথ্যপ্রকাশের জন্য অতিরিক্ত সময় চেয়ে শীর্ষ আদালতে আর্জি জানিয়েছিল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই)। সোমবার এসবিআই-এর সেই আর্জি শুনবে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ। একান্ত ইন্টারভিউয়ে কপিল সিব্বাল বলেন, এসবিআই যে যুক্তি দিয়েছে তা শিশুসুলভ। তারা জেনে বুঝে সুপ্রিম কোর্টের আদেশের অবমাননা করছে। এক্ষেত্রে নিজের মর্যাদা রক্ষার দায় একান্তভাবেই সুপ্রিম কোর্টের। তিনি আরও বলেন, আসলে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রকে আড়াল করার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে এসবিআই। তারা যা করছে তাতে শীর্ষ আদালতের মর্যাদা লুন্ঠিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে নিজের মর্যাদা রক্ষার দায় সুপ্রিম কোর্টের। এসবিআই সুপ্রিম কোর্টের সামনে যা বলেছে তা আসলে হাস্যকর। এখন সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে কীভাবে নিজের আদেশ রক্ষা করবে তারা। মন্তব্য সিনিয়র আইনজীবীর।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘ক্ষতিকারক’ বলে আখ্যা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত এসবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিল, অবিলম্বে যেন ওই বন্ড দেওয়া বন্ধ করে তারা। এর পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ দেয়, ২০১৯-এর ১২ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য ৬ মার্চের মধ্যে আদালতের কাছে তুলে দেবে এসবিআই। কিন্তু এসবিআই এমন রায়ের তোয়াক্কা করেনি।
বিরোধীরা আশা করেছিল, গত ছ’বছরে বিজেপি কোন কর্পোরেট সংস্থার থেকে কত টাকা পেয়েছে, এতে তা প্রকাশ্যে আসবে। ২০১৭-১৮ থেকে ২০২২-২৩-এর মধ্যে ছ’বছরে রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা চাঁদা পেয়েছিল। এর মধ্যে বিজেপি একাই পেয়েছিল ৬৫৬৪ কোটি টাকা। সুপ্রিম রায়ের পরও বিজেপিকে আড়াল করতে সমানে টালবাহানা করছে এসবিআই। প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস।
গত সোমবার এসবিআই শীর্ষ আদালতে জানায়, রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দানকারীদের তথ্য সুরক্ষিত করার জন্য গৃহীত কঠোর সাধারণ কার্যপদ্ধতির (এসওপি) কারণে ‘ডেটা ডিকোড’ বা তথ্য পুনরুদ্ধার করা একটি জটিল প্রক্রিয়া। তাই এর জন্য আরও সময় প্রয়োজন। যদিও অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর)-এর মতো অধিকার রক্ষা সংগঠনগুলির অভিযোগ, ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে’ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের অবমাননা করছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।